ঢাকা, শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০০ সফর ১৪৪৭

অন্যান্য

সাদা তাপসের কালো টাকা- প্রথম পর্ব

ব্যারিস্টার যখন মৎস্য খামারি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৪০, জুলাই ২৬, ২০২৫
ব্যারিস্টার যখন মৎস্য খামারি শেখ ফজলে নূর তাপস। (গ্রাফিতি)

শেখ ফজলে নূর তাপস। পিতা নিহত হয়েছিলেন মর্মান্তিকভাবে, গণ অভ্যুত্থানে।

অলৌকিকভাবে বেঁচে যান দুই ভাই পরশ এবং তাপস। অভাব-অনটনে কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। আত্মীয়স্বজনের দয়ায় শিক্ষা চালিয়ে যান। নিজের উৎসাহ এবং বিভিন্নজনের সাহায্যে ব্যারিস্টারি পড়েন। তার অসহায়ত্বের জন্য প্রয়াত ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, তাকে ডেকে নেন তার চেম্বারে। ব্যারিস্টার রফিক তাকে আদর করে ডাকতেন ‘হোয়াইট তাপস’ (সাদা তাপস)। তাপসের সহজ, সরল আচরণ এবং ভদ্র ব্যবহারের জন্যই এই নাম দিয়েছিলেন ব্যারিস্টার রফিক। আদালতপাড়ায় পরিচিতি পান ‘সাদা মনের মানুষ’ হিসেবে। কারও সাতে-পাঁচে নেই, নেই রাজনীতিতেও। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন একেবারে সুবোধ মানুষ। আইনজীবী মহলেও তার সুনাম হয়েছিল স্বচ্ছ ইমেজের জন্য। তাকে সবাই ডাকত ‘হোয়াইট কালার ব্যারিস্টার’ হিসেবেই। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকেই বদলে যেতে শুরু করেন ব্যারিস্টার তাপস। ওয়ান-ইলেভেনের সময় প্রথম পাদপ্রদীপে আসেন ব্যারিস্টার তাপস। এরপর শুরু হয় তাপসের উল্টোযাত্রা। সাদা তাপস ১৭ বছরে হয়েছেন মহাদুর্নীতিবাজ। সাদাসিধা ভদ্র মানুষটি যেখানে যেভাবে পেরেছেন অর্থ লুট করেছেন। কালো টাকা সাদা করার অভিনব প্রতারণা আবিষ্কার করেন তাপস। হয়ে যান মৎস্য খামারি। দুর্নীতি এবং অবৈধ উপায়ে অর্থের উৎস দেখিয়েছেন মৎস্য খামার। মৎস্য উৎপাদন, খামার, কৃষি ইত্যাদি কাজকে প্রণোদনা দিতে, এসবের পেশা আয়করমুক্ত রাখা হয়। আর সেই সুযোগ নেন তাপসের মতো অনেক দুর্বৃত্ত। অবৈধ অর্থ বৈধ করতে তারা বনে যান মৎস্য খামারি।

বাংলাদেশে মৎস্য খামারিদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। আয়কর নথি অনুযায়ী সাবেক মেয়র তাপসের গোপালগঞ্জে মাছের খামার রয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, সেসবের কোনো অস্তিত্ব নেই। সেই অস্তিত্বহীন মাছের খামার দেখিয়ে আয়কর নথিতে মুনাফা হিসেবে ৩৫ কোটি টাকা উল্লেখ করেছেন তাপস। পরে তিনি এ টাকা থেকে ৩২ কোটি টাকায় মধুমতি ব্যাংকের শেয়ার কেনেন। তিনি এ ব্যাংকের পরিচালক। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কেনেন ১০০ কোটি টাকার শেয়ার।

অনুসন্ধানের তথ্যমতে, ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার অন্তত ৩০০ বাড়ি কোথাও পূর্ণ, কোথাও আংশিক দখল করেন পালিয়ে যাওয়া এ মেয়র। এ ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেন ডিএসসিসি ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান ও মো. জাহাঙ্গীর আলম। ফজলে নূর তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন তাপস শিউলি, পুত্র শেখ ফজলে নাশওয়ান, তাদের মালিকানাধীন ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে রয়েছে অস্বাভাবিক আর্থিক লেনদেন তথা অর্থ পাচারের রেকর্ড। এরই মধ্যে এসব রেকর্ড সংগ্রহ করেছে দুদক টিম। অবশ্য গত ৮ অক্টোবর তাদের ব্যক্তিগত ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বুড়িগঙ্গা নদী রক্ষার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন। বিষয়টি সামনে এনে তাপস ডিএসসিসির ওই দুই ম্যাজিস্ট্রেট ও দলীয় লোকজনের প্রভাবে কামরাঙ্গীচরের কাঁচা, আধাপাকা ও ছোট ছোট পাকা প্রায় ৩০০ বাড়ি কোথাও আংশিকভাবে, কোথাও পূর্ণ দখল করে নেন।

শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের সময় ৩ আগস্ট সকালে গোপনে পালিয়ে যান তাপস। বাইরে প্রচার করেন, তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সপরিবারে সিঙ্গাপুর গেছেন। তারপর তাকে আর বাংলাদেশে দেখা যায়নি। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় গত ২৪ অক্টোবর ব্যারিস্টার তাপসকে তলব করা হয়। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয় তলবি নোটিসে। বাড়ি-৭০, রোড-১৭, ব্লক-জে, বনানী, ঢাকার ঠিকানায় নোটিস পাঠানো হলেও তিনি হাজির হননি।

দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, অর্জিত কালো টাকা সাদা করতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেছেন। তারা একই পুকুরকে মৎস্য চাষে পৃথক আয় দেখিয়ে আয়কর নথিতে দুবার করে উপস্থাপন করেছেন। কাগজে-কলমে আলাদা ব্যবসা, আলাদা আয়কর নথি। তবে এক ছাদের নিচে বসবাস। তারা স্বামী-স্ত্রী। শেখ পরিবারের অন্যতম সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন তাপস। দুজনের আয়কর নথিতে বিপুল অঙ্কের টাকার আয়। এর মধ্যে শুধু পুকুরে মাছ চাষ থেকেই দুজনের আয় প্রায় ১০৩ কোটি টাকা! গোপালগঞ্জের একই পুকুরকে স্বামী-স্ত্রী দুজনই আলাদাভাবে আয়কর নথিতে মৎস্য চাষ দেখিয়েছেন একই অর্থবছরে। অবৈধভাবে উপার্জিত কালো টাকাকে সাদা করার শুভংকরের ফাঁকি দেওয়ার এমন পুকুর চুরির চেষ্টা করায় শেষ পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে দুদকের জালে আটকা পড়েছেন আফরিন তাপসও।

আফরিন তাপসের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত ও আয়কর হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শেখ ফজলে নূর তাপসের স্ত্রী আফরিন তাপসের ২০১১-১২ অর্থবছরে যেখানে ৫৬ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল, সেখানে আওয়ামী লীগ শাসনের কয়েক বছরে ১০৫ কোটি টাকারও বেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।

আফরিন তার স্বামী শেখ ফজলে নূর তাপসের সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা ও ৯টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা এবং প্রায় ৪ লাখ মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন বলে উল্লেখ করেছে দুদক।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের স্ত্রী আফরিন তাপস ২০১২ সালের ১ জুলাই তার স্বামীর কাছ থেকে তিনটি পুকুর ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সম্পাদিত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য লিজ গ্রহণ করেন। তার আয়কর নথিতে এই দুই বছরে মৎস্য চাষে আয় দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১ হাজার ৩০৯ টাকা। এর মধ্যে ২০১৩-১৪ করবর্ষে ৪ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৪ টাকা এবং ২০১৪-১৫ করবর্ষে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৫ টাকা মৎস্য খাতে আয় দেখিয়েছেন।

শেখ ফজলে নূর তাপস মৎস্য চাষ করার জন্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফের কাছ থেকে ২০১১ সালের ১ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া মৌজায় ১১টি পুকুরসহ ৪৭ দশমিক ৫৭ একর আয়তনের নাল জমি ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছরের জন্য লিজ গ্রহণ করেন। এক বছর পর ওই ১১টি পুকুরের মধ্যে তিনটি পুকুর দুই বছরের জন্য নিজের স্ত্রী আফরিন তাপসকে লিজ প্রদান করেন। অথচ সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায় তিনটি পুকুর ব্যতীত বর্ণিত জমিতে আর কোনো পুকুরেরই অস্তিত্ব নেই। অবশিষ্ট জমি ভিটা ও বাগানবাড়ি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। যেখানে বিভিন্ন গাছপালাসহ বাগানবাড়ি রয়েছে। দুদকের তদন্ত টিম অনুসন্ধানের সময় তাদের স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন ওই তিনটি পুকুরে কখনো কোনো মাছের চাষ করেননি এবং বাস্তবতার আলোকে সেখানে মাছ চাষ করা সম্ভবও নয়। ফলে মাছ চাষের অযোগ্য তিনটি পুকুরকে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই আয়কর নথিতে মৎস্য চাষের আয় হিসেবে প্রদর্শন করেছেন।
আয়কর নথিতে শেখ ফজলে নূর তাপসের মৎস্য খাতে আয় ৯৫ কোটি ২৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩১ টাকা এবং তার স্ত্রী আফরিন তাপসের আয় ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১ হাজার ৩০৯ টাকা। অর্থাৎ তিন পুকুরে তিন বছরে স্বামী-স্ত্রীর ভিন্ন ব্যবসা হিসেবে মৎস্য আয় ১০২ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪০ টাকা। দুদক বলেছে- এ আয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ তাপসের অবৈধ আয়কে বৈধতা দিতে ওই তিনটি পুকুরে দুই বছরে মৎস্য চাষ থেকে ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১ হাজার ৩০৯ টাকা আয় দেখিয়েছেন আফরিন তাপস। আলোচ্য মৎস্য চাষের বাইরে তাপসের স্ত্রীর আয় পাওয়া যায় আরও ২৮ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার ২৪১ টাকা।

দুদকের তদন্তে আফরিন তাপসের নামে ৯টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেন পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, তিনি এই ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৭০ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬৯ টাকা লেনদেন করেছেন। এর মধ্যে ৩৯ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮২ টাকা জমা ও ৩১ কোটি ৭ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৭ টাকা উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে ৮ কোটি ৭৫ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৩ টাকা স্থিতি রয়েছে। এ ছাড়া মধুমতি ব্যাংক পিএলসি, মতিঝিল শাখার আরএফসিডি হিসাব নম্বর-১১০৩১৫৬০০০০০০০৭-এর মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট হতে ২০২৪ সালের ১১ মার্চ পর্যন্ত তিনি ২ লাখ ২ হাজার ২৫৯ মার্কিন ডলার জমা ও ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৪ মার্কিন ডলার উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে ওই হিসাবে ৮ হাজার ৫৫৫ মার্কিন ডলার স্থিতি রয়েছে। উল্লিখিত লেনদেন তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে জানায় দুদক তদন্ত টিম।

এভাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি তার অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করলেও ব্যবসার ধরন বলেননি। অথচ ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ দেখিয়েছেন ৩ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫৪ টাকা। উপহার হিসেবে পেয়েছেন ৫০০ ভরি স্বর্ণ। ১ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার ৫১৩ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি রয়েছে (ঢাকা মেট্রো-১৩-৭৪৭৪) তার নামে।

দুদক কর্মকর্তা জানান, দুই বছর মৎস্য চাষ করলেও আফরিন তাপস ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে রীতিমতো কৃষিজীবী। চলতি অর্থবছর পর্যন্ত প্রতি বছর ২২ হাজার টাকা করে কৃষি খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্বামী শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন ৫ কোটি ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৭ টাকা। আফরিনের মায়ের মৃত্যুর পর ব্যাংকে মায়ের জমাকৃত টাকার অংশীদারি বণ্টনে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৭ টাকা। অনুসন্ধান তথ্যে দেখা যায়, আফরিন তাপসের নামে ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডের প্লট নম্বর-৫০০/ই (পুরাতন), ০২ (নতুন)-এর রূপায়ণ প্রাইম আবাসিক এলাকায় ৫,৩১৯ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট দুটি ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নম্বর-এ/৮ ও বি/৮) রয়েছে। ২০১৩ সালের ১৬ জুন রেজিস্ট্রিকৃত (দলিল নম্বর-২৪৫৩) এ দুটি ফ্ল্যাটের মূল্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ১১ হাজার ৪৩১ টাকা। যা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ দুটি ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক ৬ কোটি টাকা। এ ছাড়াও গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার চান্দনা মৌজায় ৮২ শতাংশ চালা জমি রয়েছে আফরিনের নামে। ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রি করা এসব জমির ক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ২০ লাখ ১৬ হাজার ১০৮ টাকা (দলিল নম্বর-৯৪৮৮) দুদক মনে করছে, এসব জমির প্রকৃত মূল্য ১৫ কোটি টাকার বেশি হতে পারে। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ইউসুফগঞ্জ মৌজায় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০২ নম্বর সড়কের ২ নম্বর প্লটটিও আফরিন তাপসের। জমির পরিমাণ ৯ কাঠা ১৫ ছটাক ৩৭ বর্গফুট (জমি দলিল নম্বর-১৪৩১৭)। ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর রেজিস্ট্র্রি করা জমির দলিল মূল্য ৫ কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার ২৪০ টাকা। ফলে দেখা যাচ্ছে, ব্যবসার আয়, মৎস্য চাষ, ব্যাংক সুদ, ব্যাংকে নগদ টাকার বাইরেও আয়কর নথিতে আফরিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এসব সম্পদের মূল্য প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা।

দুদক সূত্র জানায়, আফরিন তাপসের মোট ৩৪ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৯ টাকা আয়ের মধ্যে ১৩ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৯ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ। ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৩৫ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। পারিবারিক ব্যয় রয়েছে ৭ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ৯২৫ টাকা। দুদক তথ্য যাছাইবাছাই করে দেখতে পায় আফরিন তাপস ৬ কোটি ৪০ লাখ ৮৯ হাজার ৯৮ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে তার স্বামী শেখ ফজলে নূর তাপস প্রকৃত আয়ের বাইরে ৭৩ কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন ও ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
 
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।