ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

দেনা ও লোকসানের ভারে জর্জরিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৩
দেনা ও লোকসানের ভারে জর্জরিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

ঢাকা: এমনিতেই দেনা ও লোকসানের ভারে জর্জরিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। দেনার দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দারস্থ হয়েও সাড়া মেলেনি।



এই দূরাবস্থার মধ্যেই ইজিপ্ট এয়ারলাইন্স থেকে দুটি উড়োজাহাজ লিজ নিচ্ছে বিমান কর্তৃপক্ষ। আর এজন্য অগ্রিম ৫০ কোটি টাকা গুণতে হচ্ছে বিমানকে।

প্রতিমাসে প্রতিটি উড়োজাহাজের জন্য বিমানকে ভাড়া দিতে হচ্ছে ৫ লাখ ৮৫ হাজার মার্কিন ডলার। জানা গেছে, লিজদাতা এয়ারলাইন্সকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা অগ্রিম প্রদান করে উড়োজাহাজ দুটি নিতে হচ্ছে। কেভিন স্টিল চলতি বছরের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত ৬ মাসে বিমানের আয় কমেছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এর বাইরে বিমানের দেনা রয়েছে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে। এ অবস্থায় অগ্রিম হিসেবে ৫০ কোটি টাকা দেওয়ার নজিরবিহীন শর্ত দিয়ে দুটি উড়োজাহাজ নিচ্ছে বিমান।  

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সভায় রোববার ইজিপ্ট এয়ারলাইন্স থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ ৫ বছরের জন্য লিজ নেওয়ার প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়।
 
বিমানের পরিচালনা পর্ষদ সভায় এক পর্ষদ সদস্য এই টাকা বিমানের রয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে, সংস্থার অর্থ বিভাগ থেকে জানানো হয়, এই টাকা বিমানের কাছে রয়েছে। মূলত বিমানের লিজ নেওয়া সিন্ডিকেট চক্র কমিশন বাবদ একটি বড় টাকা হাতিয়ে নিতেই আর্থিক সংকটের মধ্যেও অগ্রিম টাকা দিতে তৎপরতা চালাচ্ছে। বিমান সূত্র জানায়, অগ্রিম টাকা না দিলে উড়োজাহাজ সরবরাহের প্রস্তুতি শুরু করবে ইজিপ্ট এয়ার।     

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বিমানের ইতিহাসে একসঙ্গে এত টাকা অগ্রিম দিয়ে উড়োজাহাজ ভাড়া নেওয়া নজিরবিহীন ও রহস্যজনক। বিমানের এক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, পরিকল্পনাহীনভাবে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়া নিয়েছে বিমান। কারণ পাঁচ বছরে বিমান লিজদাতা কোম্পানিকে যে পরিমান টাকা দিতে হবে তার চেয়ে কম টাকা দিয়ে এর চেয়ে কম বয়সী উড়োজাহাজ কেনা সম্ভব ছিল।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা যে মুহূর্তে টাকার জন্য বিমান দেউলিয়া হওয়ার পথে সেই সময় এ ধরনের সিদ্ধান্ত রহস্যজনক। সরকারের কাছে হাত পেতেও টাকা পায়নি, সেই মুহূর্তে একটি লিজ দাতা কোম্পানিকে এক সঙ্গে ৫০ কোটি টাকা নগদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিমানের সবমহলে প্রশ্ন উঠেছে।

বিমান বলছে, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তারা ইজিপ্ট এয়ার থেকে একটি উড়োজাহাজ পাবে। অন্যটি পাওয়া যাবে ফেব্রুয়ারিতে। বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলছে, লিজের উড়োজাহাজ দুটি বহরে যোগ হলে সব সংকট দূর হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে তারা বিকল্প ব্যবস্থায় ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখবেন।     

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭   
সম্পাদনা: কবির হোসেন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।