ঢাকা: ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, জল কামানে স্বাগত জানিয়ে শুরু হয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্রাঙ্কফুর্ট অভিযান। কিন্তু চালু হওয়ার মাত্র ৬ মাসের মাথায় ঢাকা-ফ্রাঙ্কফুর্ট রুট বন্ধ করে দিলো বিমান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে মাত্র ২১ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যায় বিমানের ফ্রাঙ্কফুর্ট রুটের সর্বশেষ ফ্লাইট। তবে শুধু সোমবারই নয়, এই রুটের ফ্লাইটে ২০/২৫ জনের বেশি যাত্রী কখনোই হতো না। এর আগেও লোকসানের কারণে এই রুট বন্ধ করে দিয়েছিল বিমান। ২০০৬ সালে বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্রাঙ্কফুর্ট, নারিতা, ম্যানচেস্টারসহ ৮টি লোকসানি রুট বন্ধ করে দেয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাদ্দেক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কথা বলা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোকসানি জেনেও বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ৬ মাস আগে পুনরায় এই রুট চালু করে। বোয়িং থেকে সদ্য কেনা ৭৭৭-৩০০ ইআর মডেলের ঝকঝকে উড়োজাহাজে পরিচালনা করা হচ্ছিল ফ্রাঙ্কফুর্ট রুটের ফ্লাইট। বিশাল এ উড়োজাহাজের আসন সংখ্যা ৪১৯। অথচ ফ্লাইট প্রতি গড়ে ২০ জনের বেশি যাত্রী কখনোই মিলতো না।
লোকসানি জেনেও দ্বিতীয়বার ঢাকা-ফ্রাঙ্কফুর্ট রুট চালু হওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক ছিল। যাত্রী না হওয়ায় এর আগে চালু হয়েও বন্ধ হয়েছিল এ রুট। কিন্তু বিমানের একজন শীর্ষ কর্তার ইচ্ছেতে চালু করা হয়েছিল রুটটি। উদ্বোধনী ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা ছিল ২৯ জন। আর শেষ ফ্লাইটে যাত্রী মিলল মাত্র ২১ জন।
বিমান চলাচল ব্যবসায় কেবিন ফ্যাক্টর (পুরো উড়োজাহাজের মোট আসনের) ৭৫ শতাংশ যাত্রী না হলে ওই ফ্লাইটে কোনোভাবেই লাভ করা সম্ভব নয়। অথচ ফ্রাঙ্কফুর্ট রুটে দিনের পর দিন বিমানের ১০ ভাগের এক ভাগ কেবিন ফ্যাক্টর না হওয়া সত্ত্বেও ফ্লাইট চলতে থাকে। মূলত বিমানের সুবিধাভোগী এক শ্রেণির শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তির স্বার্থেই যাত্রী না থাকা সত্ত্বেও মাসের পর মাস ধরে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছিল।
একইভাবে সদ্য চালু করা বিমানের ঢাকা-ইয়াঙ্গুন, ঢাকা-দিল্লি, ঢাকা-ম্যানচেস্টার ফ্লাইটেও যাত্রী নেই। এসব রুটে বিমান আগেও লোকসান দিয়েছে। তারপরও বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের ইচ্ছাতে একের পর এক লোকসানি রুট চালু হচ্ছে। যেকোনো রুট চালু করার আগে মার্কেট সার্ভে করতে হয়। ফ্রাঙ্কফুর্ট রুট চালুর আগে তা-ও করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৪