মালয়েশিয়া থেকে: ২৬ নভেম্বর (বুধবার) রাত সাড়ে ১০টায় কুয়ালামপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করি। যাত্রী ছিলাম ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের এমডি-৮৩ নম্বর ফ্লাইটের।
এটিই আমার প্রথম আকাশ ভ্রমণ। এর আগে সহকর্মীদের কাছ থেকে প্লেন যাত্রার অভিজ্ঞতার কথা শুনেছি। মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল-সংবাদ মাধ্যমে বারবার নেতিবাচক শিরোনামে প্রকাশিত খবরও।
তবে নতুন ও ইউনাইটেডের যাত্রী হিসেবে ভালো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। নির্দিষ্ট সময়েই ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ছেড়েছে ফ্লাইটটি।
চারঘণ্টার ভ্রমণে কুয়ালালামপুরে পৌঁছানোর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগেই নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছালাম।
ফ্লাইট পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন ওমর ফারুক। সহকারী হিসেবে ছিলেন ক্যাপ্টেন আশরাফ হোসেন। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ফ্লাইট চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে ক্যাপ্টেন ওমরের।
এর আগে সহকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছি- প্লেন যাত্রার সময় এক ধরনের ঝাঁকুনি হয় তবে বাস্তবে তা পাইনি। ফ্লাইটে খাবার মেনু ও পরিবেশনা যাত্রীদের মন কেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিভিন্ন কারণে ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেডের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের প্লেন চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু অল্প সময়েই পেছনের অভিজ্ঞতা দূরে ঠেলে ফের শতভাগ যাত্রী সেবা নিয়ে আকাশে উড়ে ইউনাইটেডরে প্লেন। যেন আকাশ ভ্রমণে এক নব দিগন্তের সূচনা করেছে সংস্থাটি।
ইতোমধ্যেই হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সংস্থাটি। এর সুবাদে যাত্রীদের কাছ থেকে আরো সাড়া পেয়েছে ইউনাইটেড।
পরিকল্পনা রয়েছে ভবিষ্যতে একগুচ্ছ যাত্রী সেবা নিয়ে নতুন আঙ্গিকে ফ্লাইট পরিচালনার। বন্ধ রুট চালুর পাশাপাশি আরো কিছু নতুন গন্তব্যে যাত্রার অপেক্ষায় রয়েছে ইউনাইটেডের আরো প্লেন।
ইউনাইটেড সূত্র জানায়, বর্তমানে ঢাকা-কুয়ালালামপুরে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট চালু আছে। তবে যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১০ ডিসেম্বর থেকে একই রুটে আরো দুটি ফ্লাইট বাড়ানো হবে।
একই সঙ্গে সপ্তাহে তিনদিন ঢাকা-মদিনা-জেদ্দা রুটে চলাচল করছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ।
গতমাসে ঢাকা-করাচি রুটে যাত্রা শুরু করেছে সংস্থাটির ফ্লাইট। এ রুটে সপ্তাহে দুইদিন চলাচল করা যাবে।
অন্যদিকে যাত্রীদের চাহিদা মাথায় রেখে ২০১৫ সালের শুরুতেই ঢাকা-কাঠমান্ডু, ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-ব্যাংককের ফ্লাইট চালু করছে ইউনাইটেড। একই সময়ে ঢাকা-কলকাতার ফ্লাইটও চালু হবে।
এছাড়া খুব শিগগিরই ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-ঈশ্বরদী অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু হবে।
ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বিশেষ ফ্লাইট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ওয়ান ওয়ে যাত্রার জন্য তিন হাজার ৪০০ টাকা খরচ হচ্ছে। আর রিটার্ন ভাড়ায় ছয় হাজার ৫০০ টাকা ব্যয় করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ভাড়াতেই যাত্রীরা আসা-যাওয়া করতে পারবেন। বাড়তি কোনো ব্যয় বাং ট্যাক্স কিংবা চার্জ দিতে হবে না।
এছাড়া ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-যশোর, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-রাজশাহী, ও ঢাকা-সৈয়দপুর অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু রয়েছে।
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ইউনাইটেড ২০০৭ সালের ১০ জুলাই প্রথম ফ্লাইট চালু করে। আইসল্যান্ড এয়ার থেকে কেনা বমবার্ডিয়ার ড্যাশ-৮-১০০ দিয়ে ফ্লাইট চালানো শুরু করে ইউনাইটেড।
গত ৬ বছরের পরিসেবায় ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ প্রায় ৩৮ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে প্রায় ১৪ লক্ষ যাত্রী এবং ২ হাজার ৮০০ টন মালামাল পরিবহন করেছে। সব মিলিয়ে এর কর্মী সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২০০ জন।
ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ দেশের প্রায় সব অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু রয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে মোট ১৪টি রুটে ফ্লাইট চালাচ্ছে সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অব্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হয় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। আর মাসকট ও কলকাতা রুটের ফ্লাইটগুলো চট্টগ্রাম থেকে পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৪