কলেজ সংলগ্ন একটি এলাকায় রাস্তা নির্মাণের দাবিতে সোমবার (১৯ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে বিক্ষোভ মিছিল, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা মেরে সাত শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী দাবি করেন, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন, উৎপল বড়ুয়া, শরীফ হোসাইন শিকদার, সাব্বিরুল হক জুলাইব, নুরুল আবরার শাকিব, সালাহ উদ্দিন জাশেদ, মো. আনাস ও মো. রায়হানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে পরে ভাঙচুর এমনকি শিক্ষক লাঞ্ছিত করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষকও অভিযোগ করেন, মিছিলকারীরা অন্তত সাতজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এর মধ্যে শিক্ষক মিঠুন চক্রবর্তী জখমও হয়েছেন।
তবে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জাকির হোসেন বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। আন্দোলনটি করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরারা। তারাই অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়েছে।
ছাত্রলীগ উল্টো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেছে বলেও দাবি করেন তনি।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ওই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলছে। তাই সেখানে রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করতে কলেজের পক্ষ থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সদর থানা পুলিশ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে ভুল তথ্য দিয়ে এফাজ উল্লাহ নামে এক ব্যক্তির প্লটে যাওয়ার সুবিধার্থে ওই স্থানে রাস্তাটি নির্মাণ করছে। যা কলেজের কোনো কাজে আসবে না।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বাংলানিউজকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অধ্যক্ষের কক্ষের তালা খুলে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি সুরাহার জন্য শিক্ষক, ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিম উদ্দিন প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা নির্মাণে আদালতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিষয়টি গোপন করে প্রকল্পটির অনুমোদন নেন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ইয়াকুব আলী ও জাকির হোসেন।
‘অনুমোদনে শর্ত ছিলো আমার সঙ্গে পরামর্শ করে রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে। কিন্তু তারা আমাকে না জানিয়েই গোপনে রাতের আঁধারে রাস্তা নির্মাণ করে। এ কারণে ১৭ মার্চ প্রকল্পটি বাতিল করে দেওয়া হয়। রাস্তা নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ’
তারপরও রাতের আঁধারে কাজ করার অপরাধে চারজনকে আটক করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে একজনকে দুই বছরের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে একটি বৈঠক করা হবে। আশা করি সেখান থেকেই এর একটি আইনগত সমাধান হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৮
টিটি/জিপি