রোববার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের অডিটরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিনন্দন জানান নাসিম। ‘ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট অব থ্যালাসেমিয়া’ বিষয়ক ১ম জাতীয় সেমিনার ছিল এটি।
সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, একটি দেশের যাবতীয় সর্বোচ্চ উন্নয়ন হয় গণতান্ত্রিকভাবে। আর গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তটি সঠিক। তাই তাদের নির্বাচনের মাঠে অভিনন্দন জানাই।
দেশে বর্তমানে অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে আনন্দদায়ক পরিবেশে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে বলেও মন্তব্য করেন নাসিম।
এসময় গণতন্ত্রের চর্চার উদাহরণ দিতে গিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ‘হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ’-এ রিপাবলিকানদের হেরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য।
থ্যালাসেমিয়া একটি বেদনাদায়ক রোগ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, থ্যালাসেমিয়ার কারণে একটি শিশু জন্মগ্রহণের পর আবার মৃত্যুর শঙ্কা নিয়ে বেঁচে থাকে। এর চেয়ে বেদনাদায়ক আর কি হতে পারে। হাইকোর্ট থেকে যতো নির্দেশনাই আসুক না কেন, আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে থ্যালাসেমিয়া দূর করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরকে বলবো, কোনো প্রকার লজ্জা কিংবা সংকোচ করবেন না। সন্তানদের বিয়ে দেওয়ার আগে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করাবেন।
ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে সাত হাজার চিকিৎসক নিয়োগ পাবেন উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, সারাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা যে ৭ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলাম তা ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া এই চিকিৎসকরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করবেন। এছাড়া এমবিবিএস'র ভর্তি পরীক্ষা নিখুঁত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রশ্নফাঁস হয়নি।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের বিবরণ দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই পাঁচ বছর ক্ষমতাকালে আওয়ামী লীগ সরকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে। পাঁচ হাজার কোটি টাকার স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। তাছাড়া একসঙ্গে ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়ার নজির বিশ্বের আর কোথাও নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের মহাসচিব আব্দুর রহিম সাবেক সচিব আক্তার-ই-মমতাজসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগী ও তাদের অভিভাবক এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সেমিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের এবারের ডায়ালগ ছিল ‘২০২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া মুক্ত হবে’। এর অর্থ এই না যে, ২০২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশে আর কোনো থ্যালাসেমিয়া রোগী থাকবে না। এর মানে হচ্ছে ওই সময়ের মধ্যে এটি আর ‘জনসমস্যা’ হিসেবে বিবেচিত হবে না। অর্থাৎ থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা কমে যাবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
এছাড়া বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭ ভাগ থ্যালাসেমিয়া বাহক হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। প্রতিবছর ৭ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। এই সমস্যা দূর করতে হলে আমাদের জনসচেতনতা বাড়ানো ছাড়া আর কোনো ভয় নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৮
এমএএম/জেডএস