আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম গণতান্ত্রিক জোট নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে জোটগতভাবেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ছাড়াও জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারাকে নিয়ে আসন ভাগাভাগি করে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হবে। দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হবে।
দলের আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি এবং জমা নেওয়ার কাজ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। ৩০০ আসনে মনোনয়নের জন্য ৪ হাজার ২৩ জন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। প্রতিটি আসনে গড়ে ১০/১২ জন করে প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী।
বুধধার (১৪ নভেম্বর) মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, এত প্রার্থীর প্রত্যেকের সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হবে না। মূলত এদেরকে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করার নিদের্শ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী নিশ্চিত করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারকরা জানান, প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের মধ্যে ব্যাপক প্রতিযোগিতা রয়েছে। একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার পর বাকিদের বসিয়ে একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে না পারলে বিজয় কঠিন হয়ে পড়বে।
এ কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে আগেই সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত দলের যৌথসভায় তিনি বলেছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হলে বা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিলে আজীবনের জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। অতীতে নানা কারণে এ ব্যাপারে শিথিলতা দেখানো হলেও এবার কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
গত ১২ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের জেতার মতো প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে। আমাদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জিততে হবে। তাদের দুর্বল ভাবার কোনো কারণ নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, এবারের নির্বাচনে বিজয় অর্জন সহজ হবে, এটা মনে করার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ সেটা মনেও করছে না। তবে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিটি আসনের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও এই উপলব্ধি তৈরি হলে সমস্যা হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলটির সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। আমাদের দলের প্রার্থী অনেক রয়েছে। এদের মধ্যে থেকেই বাছাই করে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। যারা বিজয়ী হয়ে আসতে পারবেন তারাই মনোনয়ন পাবেন। বুবধার থেকেই সংসদীয় বোর্ড বসে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করবে।
এদিকে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে বিকল্পধারার নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের পাশাপাশি আসন ছাড়ের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিকেলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার কমিটি সভা করেছে। সভায় আগামী নির্বাচনে দলের পক্ষে জনপ্রিয় বিনোদন তারকাদের প্রচারে নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ