বুধবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
কাদের বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কী করবে, কী করতে চায় সেটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না।
কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দণ্ডিত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, এক আপিলের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) হাইকোর্ট এমন অভিমত জানানোয় দু’টি দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদার নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটাকে তারা (বিএনপি) নির্বাচন বানচালের ইস্যু করতেই পারে। তারাতো এই মুহূর্তে প্রধান নির্বাচন কমিশনারেরই (সিইসি) পরিবর্তন চায়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন, এই মুহূর্তে এ ধরনের দাবি কি বাস্তবসম্মত? বাস্তবসম্মত নয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন- এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ড. কামাল হোসেনকে তাদের জোটের শীর্ষ নেতা বলা হয়। কিন্তু তাদের প্রধানমন্ত্রী কে, সেটা আমরা এখনো জানতে পারছি না। হু ইজ দেয়ার পিএম ফেস? সেটা জাতি জানতে চায়। কাকে নিয়ে তারা স্বপ্ন দেখছেন?
নির্বাচনে মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, জোট-মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর আসন চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হবে। আমরা চেষ্টা করছি, বাছাইয়ের পরই চূড়ান্ত করা হবে। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগেই এ বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ২৩১ জনকে মনোনয়ন দিয়েছি। নতুন মুখ ৪৫ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এখন প্রত্যাহার পর্যন্ত জোট মিলিয়ে সমীকরণ কোথায় গিয়ে ঠেকে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে। প্রতিদিনই কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য সাংগঠনিকভাবে দক্ষ এ রকম ৪-৫ জন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেত্রী (দলের সভাপতি শেখ হাসিনা)। এরা হচ্ছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক এবং আহমদ হোসেন। এরা নির্বাচন পরিচালনা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। নেত্রী গতকাল তাদের ডেকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, আরও পরামর্শ দেবেন।
জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে এমন ব্যক্তিকেও বিএনপি মনোনয়ন দিচ্ছে বলে অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জঙ্গি বলেই তারা মনোনয়ন পেয়েছে। যারা জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তারা জঙ্গিদের মনোনয়ন দেবে এটাই স্বাভাবিক।
সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা ইতিবাচক। তারাতো মনোনয়ন চাননি। তারা এমন সময় যোগ দিয়েছেন তখন মনোনয়ন চাওয়ার সুযোগ নেই। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে সহযোগিতা করতে চান। তারা মনোনয়ন চান না।
তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে কোনো ধূম্রজাল বা ধোঁয়াশা নেই। আমরা ১৭-১৮টি আসনে ডাবল প্রার্থী দিয়েছি। অনেকে ঋণখেলাপী আছেন। কেউতো স্বীকার করেন না। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি। এ কারণে ডাবল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেখানে ডাবল আছে সেখানে জরিপও হচ্ছে। যার বিজয়ের সম্ভাবনা আছে তিনিই মনোনয়ন পাবেন। অন্যজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। জনমত জরিপে যিনি এগিয়ে তিনিই মনোনয়ন পাবেন। জাতীয় পার্টি হোক, ১৪ দল, আওয়ামী লীগের, যে হোন না কেন, যদি কেউ উইনেবল হন, তিনি মনোনয়ন পাবেন। জনমত জরিপ এখনও চলছে। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে। এতো দিন দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে, এখন জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। এটা মানসিকভাবে হয়তো অনেকের মেনে নেওয়া কষ্ট হয়। কিন্তু তাদের আমরা বোঝাবো ত্যাগ স্বীকারের জন্য। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর আমাদের কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। প্রার্থীর বিরুদ্ধে গেলে বহিষ্কার করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এসকে/এইচএ/