এছাড়া দুর্নীতি ও দারিদ্র্যমুক্ত করা, শিক্ষার মান বাড়ানো, খাদ্যে পুষ্টির নিশ্চয়তা, জিডিপি বাড়ানো ব্লু-ইকোনোমি অর্জন, মেগা প্রকল্প গ্রহণসহ গ্রামকে শহরে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়ে আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিতে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা এসব তথ্য জানা গেছে।
ইতোমধ্যেই ইশতেহারের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
ইশতেহার তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের ইশতেহারে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করে তরুণ সমাজের উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এজন্য কী করা হবে তার নির্দেশনা থাকছে। দেশের জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ তরুণ। তাদের কাজে লাগাতে আগামী দিনের উন্নয়নের সঙ্গে, দেশ পরিচলানার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করা হবে। তাদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। গ্রামকে শহরে পরিণত করতে গ্রামকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মসংস্থান গড়ে তোলা হবে।
এছাড়া ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির এবং সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার মান উন্নয়নের জন্য শিল্পায়ন বাড়ানো হবে। সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার যে ঘোষণা আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
দেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। খাদ্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আগামীতে পুষ্টির উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ জন্য খাদ্যের পুষ্টিমান উন্নয়নের ঘোষণা থাকবে ইশতেহারে।
দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে এর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা এবং সুশাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার থাকছে এ ইশতেহারে। প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনীকে আরও আধুনিক ও জনহিতৈষী করে গড়ে তোলার কথা থাকবে। গত ১০ বছরে দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। এখন শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি রোধে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থার উল্লেখ থাকবে ইশতেহারে। জিডিপি, বিনিয়োগ কিভাবে বাড়ানো যায়, কিভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমানো যাবে সে বিষয়গুলো থাকবে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি দুই ডিজিটে উন্নীত করার কথা উল্লেখ করা হবে। ইনস্যুরেন্স ব্যবস্থা কি হবে এবং ইনস্যুরেন্স কিভাবে ভূমিকা রাখবে সে বিষয়ে ইশতেহারে উল্লেখ থাকবে।
বর্তমানে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। আরও কিছু মেগা প্রকল্পের কথা ইশতেহারে তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, দ্বিতীয় যমুনা সেতু নির্মাণ, আরও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের ঘোষণা অন্যতম।
ব্লু ইকোনোমি (সমুদ্র অর্থনীতি) অর্জনে ইশতেহারে দিক নির্দেশনা থাকবে। ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে সমুদ্রসীমা বিজয়ের পর বিশাল জলরাশি বাংলাদেশের হয়েছে। এ সমুদ্রসীমায় যে সম্পদ রয়েছে সেটা কিভাবে আহরণ করে অর্থনৈতিক উন্নতি করা হবে সে ব্যাপারে ঘোষণা থাকবে।
ভিশন-২০২১ ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আগামীতে লক্ষ্য, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। ইতোমধ্যেই ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে অগ্রসর করে নিয়ে তা গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। গ্রামকে পরিণত করা হবে শহরে। ৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং আগামী ২১০০ সালে অর্থাৎ ৮০ বছর পর বাংলাদেশ কেমন হবে ইশতেহারে সে ঘোষণা দেওয়া হবে। এর জন্য ১০০ বছরের ডেল্টা প্লান তুলে ধরা হবে ইশতেহারে।
ইশতেহার তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ইশতেহারের খসড়া ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। এখন এটি নেত্রীর কাছে আছে। তিনি দেখছেন। ইশতেহার প্রকাশের তারিখ এখন নির্ধারণ হয়নি। তবে দ্রুতই এটা প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৮
এসকে/এসএইচ