তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম সফল রাষ্ট্র। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র’ মন্তব্যটি তাদের (বিএনপি) বেলায়ই প্রযোজ্য।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) জেলা প্রতিনিধিদের দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই কথা, তার বেলায় সত্য। বিএনপির মহাসচিব হিসেবে তার যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, তিনি তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবেও দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে আমি অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তার সম্পর্কে আমার ধারণা অনেক উঁচু ছিল। তিনি এক সময় ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা করতেন। আমি মনে করতাম, রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সমসাময়িক বিশ্বের খবর রাখেন, কিছু পড়াশোনা করেন। কিন্তু আমার ধারণা তিনিই ভুল প্রমাণ করলেন।
মির্জা ফখরুল কী জানেন না, তারা যে ৫৪০ ডলার মাথাপিছু আয়ের বাংলাদেশ রেখে গিয়েছিলেন, তা এখন প্রায় দুই হাজার ডলার ছুঁয়েছে। বাংলাদেশ পৃথিবীর প্রথম পাঁচটি দেশের অন্যতম, যারা ধারাবাহিকভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতে পেরেছে। সে খবর তিনি রাখেন না! বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘের মহাসচিব, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যে প্রশংসা করেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী সে খবরও রাখেন না! প্রশ্ন রাখেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে দারিদ্র্য দেশের তালিকা থেকে উন্নীত হয়ে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলাদেশে যখন সাড়ে চার কোটি মানুষ ছিল, তখন থেকেই খাদ্য ঘাটতি। এখন আমরা ১৭ কোটি মানুষের দেশ, এখন বাংলাদেশ খাদ্যে উদ্বৃত্ত। এগুলো কী দেশের সাফল্যের সূচক নয়!
বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৩ বছর, ভারতের ৭১, পাকিস্তানের ৭০- উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য- সমস্ত সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র! এটি ফখরুল সাহেবেরই ব্যর্থতার পরিচায়ক।
তথ্যমন্ত্রী এসময় ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বিএনপি এবং তাদের মহাসচিব বের হয়ে আসবেন এমন আশা প্রকাশ করে বলেন, আমি ফখরুল সাহেবকে বলবো, মহাসচিব হিসেবে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে নিজে বের হয়ে আসবেন এবং বিএনপিকেও ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের করে এনে একটি সফল রাজনৈতিক দল হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন।
এর আগে বাসস জেলা প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় একমাত্র সংবাদ সংস্থা বাসসকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সকল জেলা সংবাদদাতাকে ল্যাপটপ ও ভালো কাজের জন্য তাদের পুরস্কার দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
একটি হৃদয়গ্রাহী প্রতিবেদন সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়- উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মীর মো. নজরুল ইসলাম, বাসসের প্রধান বার্তা সম্পাদক আনিসুর রহমান, মফস্বল সম্পাদক অনুপ খাস্তগীরসহ জেলা প্রতিনিধিরা কর্মশালার উদ্বোধনী সভায় বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৯
টিএ