তবে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবি, পকেট কমিটি নয়, কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত নেতৃত্বের হাতেই দেওয়া হোক উপজেলা আওয়ামী লীগ পরিচালনার দায়িত্ব।
এদিকে, গত ৫ অক্টোবর ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির কর্মকাণ্ডে তৃণমূলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
সূত্র মতে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি থেকে ৩১ জন করে নির্ধারিত কাউন্সিলর সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এই ৩১ জনের মধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক, নয়টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মিলে ২১ জন। এবং বাকী ১০ জনকে বাছাই করা হবে পূর্বে উপজেলা অথবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পদে ছিলেন- কিন্তু এখন নেই, স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষক, গ্রাম্য চিকিৎসক- যারা আওয়ামী লীগ পরিবারের।
কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতারা সেসব কথা না বলে আহুত সভাগুলোতে কাউন্সিলর হতে আগ্রহীদের আবেদন করার কথা বলে আসায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মথুরেশপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিন লষ্কার, তারালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি জামান, মৌতলা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ডা. মোশারফ হোসেন ও সভাপতি অহেদুজ্জামান সানা জানান, জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা না মেনে অতি গোপনীয়তার সঙ্গে কাউন্সিলর লিস্ট প্রস্তুত করা হচ্ছে। জেলার নির্দেশনায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের কাউন্সিলর করার কথা থাকলেও কে কাউন্সিলর হচ্ছে, কে হচ্ছে না তা আমাদের জানতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের কাউন্সিলর করা হবে কী-না আমরা সন্ধিহান। আমরা আশঙ্কা করছি কোনো স্বার্থান্বেষী মহল পকেট কমিটি করার জন্য এ রকম অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এ প্রসঙ্গে জেলা নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য শেখ মোজাহার হোসেন কান্টু বাংলানিউজকে জানান, এমনিতেই জেলা থেকে যে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতেই প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তির ছড়াছড়ি। যা তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রথম থেকেই সহজভাবে গ্রহণ করেনি। তার উপর তারা আগামী নেতৃত্বের আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য সব নিয়ম-কানুন নির্দেশনা অমান্য করে তাদের মন মত কাউন্সিলর করে পকেট কমিটি করার পাঁয়তারা করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত অর্থে কালিগঞ্জ উপজেলা সাতক্ষীরা-৩ ও ৪ নম্বর সংসদীয় আসনে বিভক্ত হওয়ায় ঊর্ধ্বতন নেতারা চান না এখানে কোনো শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে উঠুক। তারা ভাগ কর, শাসন কর নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে অযোগ্য-অখ্যাত ব্যক্তিদের পদায়নের লক্ষ্যে একতরফা সম্মেলন করার চেষ্টা করছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির অন্যতম সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাস্টার নরিম আলী বাংলানিউজকে জানান, কেন্দ্র ও জেলার নির্দেশনা উপেক্ষা করে যদি কোনো প্রকার সম্মেলন করা হয়, তা হবে প্রহসনের। গণতান্ত্রিক ও গঠনতান্ত্রিক উপায়ে দলীয় নেত্রী ও জেলার নির্দেশনা মোতাবেক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সম্মেলন হোক- এটাই চাই। যেখানে আওয়ামী লীগের প্রাণ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
এসএইচ