ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশ ও গণবিরোধী’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশ ও গণবিরোধী’ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্তকে দেশ ও গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন ২০ দলীয় জোট নেত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।



খালেদা জিয়া বলেন, দেশের উন্নয়ন ও জনজীবনের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে যদি দেশ এবং দেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জনজীবন বিপর্যস্ত হয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়- তাহলে সেই সিদ্ধান্ত হয় দেশ ও গণবিরোধী। রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ঠিক তেমনি একটি দেশ ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের যুক্তিহীন জেদ ও দ্রুততাকে সন্দেহজনক ও গভীর উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট ও ১০ কিলোমিটার দূরে ৫৬৫ মেগাওয়াট ওরিয়ন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে। দেশ-বিদেশের পরিবেশবিদ, সামাজিক সংগঠন এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবাদ এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের প্রকল্পের মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দৃষ্টান্ত উপেক্ষা করে গণবিরোধী সরকার রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াটের আরও একটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে জমি ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষতিকর দিকগুলো উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক বেষ্টনী ধ্বংস করবে, জীব-বৈচিত্র্যের বিলোপ ঘটাবে, লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংসের কারণ হবে, পরিবেশ ও পানি দূষিত করবে, আশপাশের কৃষিজমির উর্বরতা শক্তি ও মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করবে এবং সর্বোপরি এ প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক হবে।

তিনি বলেন, যে সুন্দরবন লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করছে, যে সুন্দরবন প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এই দেশকে আইলা, সিডর, ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচার জন্য প্রাকৃতিক সুরক্ষা দিচ্ছে, যে সুন্দরবন জাতিসংঘের ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য, সেই সুন্দরবনকে নিশ্চিত ধ্বংসের শিকার করার চক্রান্ত সফল হতে দেওয়া যায় না, দেওয়া উচিত না। দেশের অস্তিত্ব ও স্বার্থের বিনিময়ে ব্যক্তি কিম্বা গোষ্ঠীর মুনাফা এবং অনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টা রোধ করা তাই সময়ের দাবি।

২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন  বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহম্মদ ইবরাহিম, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেম ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
এজেড/ওএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।