ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকালে আদালতে যাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও হাজিরা দেবেন তিনি।
সকাল দশটা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে এ আদালতে।
চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমাপ্ত লিখিত বক্তব্য পাঠের দিন ধার্য রয়েছে বৃহস্পতিবার। গত ০১ ডিসেম্বর লিখিত বক্তব্য পড়তে শুরু করেছেন তিনি। আর অরফানেজ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে আসামিপক্ষের জেরার কথা রয়েছে।
মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দলের সিনিয়র নেতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত হয়েছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।
আসামিপক্ষে আব্দুর রেজ্জাক খান, এজে মোহাম্মদ আলী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, সানাউল্লাহ মিয়া, মোহসীন মিয়া, বোরহান উদ্দিন ও রেজাউল করিম সরকার মামলার বিভিন্ন ধাপ পরিচালনা করতে উপস্থিত হয়েছেন।
দুদকের পক্ষে আছেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।
আর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।
চ্যারিটেবল মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।
জামিনে থাকা দুই মামলার আসামিরাও আদালতে উপস্থিত রয়েছেন। তারেক রহমানের পক্ষে হাজিরা দেবেন তার আইনজীবী।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
এমআই/ এএসআর