দলটির নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সেদিন রিজভী আরও বলেছিলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে ও সরকারের হুকুমে রকিবউদ্দীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। এবার যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন, তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় চেতনায় কাজী রকিবউদ্দীনের চেয়েও আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে।
আগের নিউজটি পড়ুন: ‘নতুন সিইসিকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান রিজভীর’
নতুন ইসি নিয়োগের সময় রিজভী ছাড়াও দলটির পক্ষ থেকে নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে সিইসি কেএম নুরল হুদাকে ‘জনতার মঞ্চের লোক, নিরপেক্ষ লোক নন’ এমন মন্তব্যও করেছিলেন। কিন্তু প্রথম সাক্ষাতে এসে নুরুল হুদাকে সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে মন্তব্য দলটির এ মুখপাত্রের।
সোমবার (২৭ মার্চ) দলটির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধদল সিইসির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ শেষে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমান সিইসি একজন সজ্জন ব্যক্তি, চাকরি জীবনে সর্বোচ্চ জায়গায় উপনীত হয়েছেন। এ ধরনের একজন মানুষ কখনোই অবান্তর কথা বলবেন না। বৈঠকে সিইসি কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। ’
বিএনপির এ নেতা বলেন, সিইসি যে কথাগুলো বলবেন, যে আশ্বাস দেবেন, সেগুলো কার্যকর হবে এবং তা যুক্তিসঙ্গত হবে বলেই আমরা মনে করি। কুমিল্লায় যে অনাচারগুলো হচ্ছে তা বন্ধ করবেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন এ প্রত্যাশা সিইসির কাছে।
বিষয়টি সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে রিজভী তা এড়িয়ে যান।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কুসিক নির্বাচন বর্তমান ইসির কাছে অগ্নিপরীক্ষা। কেননা, এ ইসির প্রতি অনেক রাজনৈতিক দলের প্রশ্ন রয়েছে। এ পরীক্ষায় পাস করলে নুরুল কমিশনের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলো আস্থা পাবে।
রিজভী বলেন, সেনা মোতায়েন আমরা বরাবরই বলে এসেছি। যেকোনো নির্বাচনেই সেনা মোতায়েন করা উচিত। বর্তমান ইসির কাছে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আরও দুয়েকদিন দেখবো। সেক্ষেত্রে প্রশাসনের যথোপযুক্ত ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না হলে, সেনা মোতায়েনে আবারও দাবি জানাবো।
তিনি বলেন, নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। মিছিলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে নতুন কোনো দায়ের করা মামলায় যেন বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা না হয়। এছাড়া নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন, কিন্তু এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। দ্রুত এ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও সাক্ষাতে সিইসিকে বলেছি।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও আবুল খায়ের ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে বৈঠকটি পৌনে ৪টার দিকে শেষ হয়। আগামী ৩০ মার্চ এ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কেএম নুরুল হুদাকে সিইসি করে পাঁচ সদস্যের কমিশন নিয়োগ দেন। অন্য নির্বাচন কমিশনাররা হলেন, মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রি. জে (অব.) শাহাদত হোসেন। এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে ওইদিন বিকেলেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন কমিশন।
বর্তমান কমিশনের মেয়াদ রয়েছে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে তারা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও ৬০ হাজারেরও বেশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করবেন।
নতুন ইসির সঙ্গে বিএনপির সাক্ষাৎ বিকেলে
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
ইইউডি/আইএ