ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

বিএনপি

নেতাকর্মীদের যে বার্তা দিলেন খালেদা

অন্তু মুজাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪২, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৮
নেতাকর্মীদের যে বার্তা দিলেন খালেদা সভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে রাজধানীসহ সারাদেশের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় নির্বাহী সদস্যদের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন, আন্দোলন-সংগ্রাম ও দলের সাংগঠনিক কর্মকৌশল নিয়ে নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

পাশাপাশি আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশের নেতাকর্মীদের মাঠে সক্রিয় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নেতারা।

সরকারের উস্কানিমূলক কোনো কর্মকাণ্ডে না জড়িয়ে নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আগামী দিনের সব কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলের প্রধান বলেন, এখন আর আমার কিছুই চাওয়ার নেই। আমি আমার ছেলে হারিয়েছি, মা হারিয়েছি, আমার স্বামী হারিয়েছি। এখন আপনারাই আমার সব। আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে আপনারা কেউ দলের সঙ্গে বেইমানি করবেন না।

খালেদা জিয়া বলেন, আমি যদি জেলেও যাই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যে নির্দেশনা দেবেন আপনারা সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। যারা দলের জন্য কাজ করেছেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু যারা বেইমানি করবে, এক পা এদিকে, আরেক পা ওদিকে রাখবে তাদের কোনো মূল্যায়নের জায়গা নেই। তারপরও আমরা কিন্তু ক্ষমা করেছি। ক্ষমা একবার হয়, বারবার হয় না। তাই আমি বলতে চাই বিপদ আসলে আসুন সকলে একসঙ্গে বিপদ মোকাবিলা করবো। আর যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলের হুঁশিয়ারি করেন।

চেয়ারপারসন বলেন, বিএনপির কোনো ভয় নেই। বিএনপির সঙ্গে প্রশাসন আছে, পুলিশ আছে, সশস্ত্র বাহিনী আছে। এ দেশের জনগণ আছে। দেশের বাইরে যারা আছেন, তারা আছেন। কাজেই বিএনপির কোনো ভয় নেই, ভয়টা আওয়ামী লীগের।

নিম্ন আদালত সরকারের অধিনস্থ দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন নিম্ন আদালত সরকারের কবজায়। পত্রিকায় যা দেখছি, তাতে বোঝা যাচ্ছে, সঠিক রায় দেওয়ার সুযোগ নেই। সঠিক রায় দিলে কী পরিণতি হয়, তা তো দেখেছেন। তারা জোর করে বিচার করতে চায়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে এতো আগে প্রচারের কারণ কী? নৌকা এমন ডোবা ডুবছে, যে তোলার জন্য আগে ভোট চাইতে হচ্ছে? হাত তুলে ওয়াদা করাতে হচ্ছে।

সভাস্থল ছেড়ে যাওয়ার সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বাংলানিউজকে বলেন, সভায় ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা ও তা সফল করতে সবাই একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আমরা সবাই মিলে শপথ নিয়েছি আগামী ৮ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে সবাই যেন ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিকভাবে, নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে যে পরিস্থিতি আসুক না কেন তা পরিচালনা করতে পারি।  নেত্রীও সেই নির্দেশনাই দিয়েছেন।

আইন-শ্ঙ্খৃলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘মামলার রায় নিয়ে নির্দেশনা হলো আইনি পক্রিয়াগুলো চলবে। উচ্চতর আদালতে আপিল করা হবে, যদি অন্যায়ভাবে সাজা চলেই আসে। আমরা একইসঙ্গে রাজপথে থাকাবো। ঢাকার নেতাকর্মীরা ঢাকায় থাকবেন। বাইরের জেলা, থানা-উপজেলায় পর‌্যায়ের নেতাকর্মীরা স্ব স্ব এলাকায় দায়িত্ব পালন করে রাজপথে অবস্থান নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৮
এএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।