ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে জাহিদের করণীয় বলে দিলেন ফখরুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে জাহিদের করণীয় বলে দিলেন ফখরুল

ঠাকুরগাঁও: ‘সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করে’ একাদশ সংসদের সদস্য হিসেবে সবার আগে শপথ নেওয়ায় জাহিদুর রহমানকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলেও ব্যাপারটি নিয়ে ‘চিন্তার কোনো কারণ নেই’ বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘জাহিদুর রহমান বিএনপিতে ছিলেন এবং আগামীতে তিনি বিএনপিতেই থাকবেন।’ এমনকি যে বহিষ্কারাদেশ হয়েছিল, তা প্রত্যাহারে জাহিদুরের কী করণীয়, তা-ও বাতলে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।

সোমবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌর অডিটোরিয়ামে বিএনপির কর্মী সভায় বক্তৃতা করেন ফখরুল। ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল) আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জয়ী হওয়ার পর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদসহ সব পর্যায় থেকে বহিষ্কৃত জাহিদুরের অনুসারী অনেক নেতা এতে উপস্থিত ছিলেন।

জাহিদুর রহমানকে চাচা সম্বোধন করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাহিদুর রহমান আমার অত্যন্ত কাছের মানুষ। তাকে অপেক্ষা করার জন্য আমি বহুবার বলেছিলাম। কিন্তু তিনি শোনেননি। দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি শপথ নিয়েছিলেন। এজন্য দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। একটু ধৈর্য ধরলে হয়তো এমনটা হতো না। তবে জাহিদুরের জন্ম বিএনপিতে। তিনি বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ। তার বিষয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বিএনপিতে ছিলেন এবং আগামীতে তিনি বিএনপিতেই থাকবেন। এরজন্য আপনাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই।

দলে ফেরার পথ সুগম করতে জাহিদুর রহমানের করণীয় বাতলে দিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা চাই সংসদে জাহিদুর রহমান এমন একটা বক্তব্য দিন, যেন দল থেকে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সারাদেশে হৈ-চৈ পড়ে যায়। আশা করি তিনি তা করবেন।

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘গণতন্ত্রের মা’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যে নেত্রী কারাগারে বন্দী ছিলেন, স্বামীর (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান) মৃত্যুর পর যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন, এখন জেলের অন্ধকারে বসে তিনি গণতন্ত্রের জন্য, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তাই ঘরের মধ্যে সভা-সমাবেশ করলেই হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন) তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করতে হবে। মানুষকে জাগ্রত করতে হবে। রাজপথে বের করে আনতে হবে। আর এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তরুণরাই পারে এদেশের পরিবর্তন ঘটাতে। আগামীতে তরুণদেরই মূল্যায়ন করা হবে।

উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একেএম মঈনুল ইসলাম সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম জিয়াসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি থেকে মাত্র ছয় জন এমপি নির্বাচিত হন। এই ছয় জনের মধ্যে রয়েছেন জাহিদুর রহমানও। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে দাবি করে প্রথমে ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করে বিএনপি। পরে তারা এই সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেবে না বলে জানিয়ে দেয়। তবে সময়সীমা শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নিয়ে নেন জাহিদুর রহমান। এই ‘অপরাধে’ তখন তাকে বহিষ্কার করা হয়।

যদিও পরে ফখরুল ছাড়া বিএনপির বাকি চার নির্বাচিত এমপিও শপথ নিয়ে নেন। এরা দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শপথ নিয়েছেন বলে জানায় বিএনপি। এমনকি বিএনপি তাদের জন্য সংরক্ষিত একটিমাত্র নারী আসনেও এমপি মনোনয়ন করে সংসদে পাঠিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৩ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।