ঢাকা: পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতা দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার(৪ জুন’২০১৫) বিকেল সাড়ে ৩টার কিছু পরে জাতীয় সংসদে তিনি বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন।
অর্থমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে ৯ম বারের মতো বাজেট পেশ করছেন। এর আগে তিনি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট উপস্থাপন করেন।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য দেশের এ যাবতকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট পেশ করছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
প্রথমেই সংসদের কাছে বাজেট পেশ করার অনুমতি চান অর্থমন্ত্রী। স্পিকার সম্মতি দিলে বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে তিনি তার বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন।
করমুক্ত আয় সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব
ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
আর নারীর ক্ষমতায়ন এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অধিকতর সম্পৃক্ততাকে উৎসাহ প্রদানে এবং সিনিয়র সিটিজেনদের করভার কমানোর লক্ষ্যে নারী করদাতা ও ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব সিনিয়র সিটিজেনদের করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের সমাজের এবং রাষ্ট্রের পালনীয় ভূমিকা বিবেচনায় তাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছেন। এছাড়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়েরসীমা ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সোয়া চার লাখ টাকার প্রস্তাবও করেছেন তিনি।
জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশ
২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদননের(জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ শতাংশ। এছাড়া, মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ২০১৪-১৫ সালের সম্পূরক ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী এ তথ্য দেন।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি নেতৃত্ত্বধীন জোটের ধ্বংসাত্ত্বক কর্মকান্ডের কারণে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারিনা। দেশে জ্বালাও পোড়াও না হলে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যেত। তারপরও বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের মধ্যে আমরা অন্যতম। ’
পাটুরিয়া-গোয়ালন্দে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু
পদ্মাসেতু প্রকল্প প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আপনাদের আমি আশ্বস্ত করে বলতে চাই ২০১৮ সাল নাগাদ এই সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারবো। এছাড়া, পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ অবস্থানে ভবিষ্যতে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
তারও আগে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকার খসড়া বাজেট অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অর্থমন্ত্রী এ বাজেট অনুমোদনের প্রস্তাব করেন।
১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত বর্তমান সরকারের ২য় ও দেশের ৪৪তম বাজেটের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য এদিন বৈঠকে বসে মন্ত্রিসভা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আজ বিকেল ৩টার কিছু পরে চিরচেনা সেই কালো ব্যাগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সংসদে আসেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
বক্তৃতার শুরুতেই তিনি জাতির উদ্দেশ্যে অতীতের প্রেক্ষাপট ও নিজেদের উন্নয়ন কাজের বর্ণনা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৫/আপডেটেড-১৭১৫ ঘণ্টা
এনএস/
** মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ২ শতাংশ