‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের’- স্লোগানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেলা দেড়টায় জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটি হবে এ অর্থমন্ত্রীর এগারোতম ও বর্তমান সরকারের নবম বাজেট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) বাজেটের আকার ছিল তিন লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে চলতি অর্থবছরের বাজেট বিদায়ী বাজেটের চেয়ে ৫৯ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা বেশি।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটটি হবে গত অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ, আর সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত হতে যাওয়া বাজেটে সারাদেশের উন্নয়নে (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) ব্যয় করা হবে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩শ’ ৩১ কোটি টাকা। আর অবশিষ্ট ২ লাখ ৪৬ হাজার ৯শ’ ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে অনুন্নয়নমূলক কাজে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা ৫ হাজার ৪শ’ ৯ কোটি টাকা। বাকি আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। সরকারের বিভিন্ন ফি থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ৮০১ কোটি টাকা।
বিদেশি অনুদান পেলে ঘাটতির পরিমাণ হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। না পেলে ঘাটতি হবে ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে সরকারকে বৈদেশিক ঋণের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণ, সঞ্চয়পত্র থেকে পাওয়া অর্থ গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি’র (মোট জাতীয় উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের এ বাজেটে বরাবরের মতোই অর্থের প্রধান খাত রাজস্ব আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা; যা গত বাজেটের চেয়ে ৩৪ শতাংশ বেশি। যদিও বিগত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে সঞ্চয়ের নির্ভরশীল জায়গা ‘ব্যাংকে’ টাকা জমা রাখলে দিতে হবে দ্বিগুন আবগারি শুল্ক।
শিক্ষা যোগাযোগ এবং তথ্য ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আগামী অর্থবছরে শিক্ষার উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে সরকার। এজন্য এখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটের ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের অন্তরায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতাধীন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটের ৬ শতাংশ। জন প্রশাসন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দাবি, এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় এবং শেষ বাজেট। বতর্মান সরকারের আগামী বাজেট হবে নির্বাচনী। তাই ভ্যাট ট্যাক্স নির্ধারণ ও আদায়ের উপর সরকারের এটিই সবচেয়ে উপযুক্ত বাজেট।
বাংলাদেশ সময়: ০১২১ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৭
এসই/জেডএস