ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

বাজেট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া গৃহিণীদের

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
বাজেট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া গৃহিণীদের গ্রাফিক্স ছবি

ঢাকা: সংসদে উত্থাপিত হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার আকারের এ বাজেট নিয়ে সন্তুষ্টি এবং অসন্তুষ্টি; দুইই আছে গৃহিণীদের। অর্থনীতির সূচকে সেভাবে স্বীকৃত না হলেও দেশীয় অর্থনীতিতে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে যাওয়া সেসব নারীরা জানিয়েছেন তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রতিবার বাজেট পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে সংসারের ব্যয় নিয়ে নতুন করে ছক কষতে হয় গৃহিণীদের।

আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তাল মিলিয়ে সংসার চালিয়ে নেওয়া সেই গৃহিণীদের প্রতিক্রিয়ায় আছে ভালো ও খারাপের মিশেল।
 
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থানের গৃহিণীদের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও লাঘবে প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া জানান তারা। হাতে তৈরি রুটি ও বিস্কুট এবং নারী উদ্যোক্তাদের শো-রুমের উপর মূসক (মূল্য সংযোজন কর) অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে এই বাজেটে।  

আবার স্থানীয়ভাবে তৈরি ফ্রিজ, এসি, মোটরসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদান আমদানিতে আমদানি শুল্ক কমানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব বিষয়ে অনেকটাই ‘সন্তুষ্ট’ গৃহিণীরা প্রশংসা করেছেন প্রস্তাবিত বাজেটের। উলটো দিকে, গুঁড়ো দুধ, চিনি, প্লাস্টিকের গৃহস্থালি পণ্যের মত দ্রব্যে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক বাড়ানোতে ‘অসন্তুষ্টি’ ও ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
 
এবারের বাজেটে দেশীয় ডেইরি ও দুগ্ধ খামারিদের সুরক্ষায় গুঁড়ো দুধের বিদ্যমান রেয়াতি আমদানি শুল্ক হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গৃহিণী ও এক সন্তানের জননী জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, বাবুর জন্য দুধ কিনতে হয়। সেই দুধের দাম যদি বাড়ে তাহলে সেটি চিন্তার বিষয়।
 
তবে শিশুদের প্রতি সরকারের বিনিয়োগ বৃদ্ধি প্রস্তাবের প্রশংসা করেছেন এই গৃহিণী। গত অর্থবছরের বাজেটে শিশুদের জন্য বরাদ্ধ অর্থ ৬৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ হাজার ২০০ কোটি টাকা করা হয়েছে; যা জাতীয় বাজেটের ১৫.৩৩ শতাংশ। জান্নাতুল বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রশংসনীয় কাজের মধ্যে এটি একটি। শিশুদের বিকাশে এই বরাদ্দ কাজে দেবে। শিশুস্বাস্থ্য, শিশুশিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে এই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সেটি হবে দারুণ এক উদ্যোগ।
 
স্বর্ণ ও রুপার জুয়েলারি, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, আমদানি করা স্মার্টফোনসহ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন সেবায় মূসক আরোপের সুপারিশ করায় এই বাজেটের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। রাজধানীর উত্তরা এলাকার বাসিন্দা হোসনে আরা বলেন, ছেলেমেয়েদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াই। অনেক দিন ধরে টাকা জমিয়েছি নিজের জন্য স্বর্ণের কিছু কিনবো বলে। কিন্তু এখন যদি দাম বাড়ে তাহলে আমাদের বিপাকে পড়তে হবে।
 
অন্যদিকে জামাকাপড, চিনি ও গৃহস্থালি প্লাস্টিক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আশংকা করছেন মিরপুরের বাসিন্দা ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহিণী সামসুন নাহার। তিনি বলেন, চিনি এবং প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে বলে শুনলাম। এতে তো আমরা যারা মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্তের মানুষজন আছি, আমাদের তো বিপাকে পড়তে হবে। বাজেটে শুল্ক বেড়েছে, স্বামীর বেতন তো বাড়েনি। টাকা পয়সা জমিয়ে দেখা যায় টুকটাক থালাবাসন বা প্লাস্টিকের ফার্নিচার কিনি। সরকার আমাদের এই অসুবিধার বিষয়টি ভেবে দেখতে পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।