ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

টেলিযোগাযোগ খাতের কর ব্যবস্থা যৌক্তিক করা জরুরি: এমটব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৪ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২১
টেলিযোগাযোগ খাতের কর ব্যবস্থা যৌক্তিক করা জরুরি: এমটব

ঢাকা: প্রস্তাবিত বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মোবাইল ফোন অপারেটররা বলেছে যে ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মোবাইল খাতের করকে যৌক্তিক করা উচিত। এই খাতটি ইতোমধ্যে করভারে জর্জরিত।

তাই ন্যূনতম কর, কর্পোরেট কর, ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং, সিম ট্যাক্সসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে কর হ্রাস করা গুরুতর প্রয়োজন।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব এক বিবৃতিতে জানায়, মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে ইতোপূর্বে সুপারিশ প্রদানসহ নানাভাবে সরকারের কাছে এই খাতের উপর বিদ্যমান উচ্চ কর ব্যবস্থা যৌক্তিক করার আবেদন জানিয়ে এলেও তা বিবেচনা করা হয়নি।

কোভিড-১৯ চলাকালীন মোবাইল ফোন খাতকে জরুরি ক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং ব্যবসার পাশাপাশি অর্থনীতি পরিচালনায় গ্রাহকদের সংযোগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এখন এই খাতের লক্ষ্য হলো পিরামিডের নিচের অংশে থাকা নিম্ন আয়ের লোকদের সংযুক্ত করা। তাই অপারেটররা সরকারকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তাদের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথকে আরও অগ্রসর করবে। এই বাজেটে ন্যূনতম কর, কর্পোরেট কর, সিম ট্যাক্স এবং ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং ইত্যাদি বিষয়গুলো সমাধান করা উচিত।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে উত্থাপিত প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে মোবাইল টেলিকম-সম্পর্কিত করের হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। মোবাইল খাত গত কয়েক বছর ধরে প্রযোজ্য শুল্কের নীতিমালা সংস্কারের জন্য আবেদন করে আসছে। তবে তা উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা এই খাতে জড়িতদের হতাশ করেছে বলে জানায় এমটব।

মোবাইল খাতে কর যৌক্তিকতার দাবি তুলে ধরে এমটব কয়েক দফা দাবি জানায়।

সেগুলো হলো-#অলাভজনক অপারেটরের উপর ন্যূনতম ২ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স প্রত্যাহার বা যুক্তিসঙ্গত করা।

#উচ্চ কর্পোরেট করের হারকে যৌক্তিক এবং সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করে তালিকাভুক্ত (বর্তমান ৪০ শতাংশ) ও অ-তালিকাভুক্ত (বর্তমান ৪৫ শতাংশ) অপারেটরদের কর ২৫ ও ৩২শতাংশ এ নামিয়ে আনা।

#সরাসরি অপারেটর বিলিং থেকে পরিপূরক শুল্ক ও সারচার্জ প্রত্যাহার।

#সকল ইনট্যাঞ্জিবল সম্পদের উপর এমোরটাইজেশন সুবিধা প্রদান করা।

#মোবাইল সিমের উপরে আরোপিত ২০০ টাকা কর বিলুপ্ত করা।

#প্রতি ১০০ টাকা টক টাইমের উপর ও ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর ৩৩.২৫ শতাংশ এবং ২১.৭৫ শতাংশ ভ্যাট, এসডি ও সারচার্জ যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা।

#সরকারি সংস্থাসমুহের জন্য ভ্যাট ছাড় সংক্রান্ত সুস্পস্ট নির্দেশনা বা গাইডলাইন প্রদান করা এবং অপরিশোধিত ভ্যাটের ওপর আরোপিত সুদ যৌক্তিক করা।  

এমটব সভাপতি ও রবির সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, যথেষ্ট যৌক্তিকতা থাকার পরেও টেলিযোগাযোগ খাতে যে পরিবর্তনসমূহ আমরা আশা করেছিলাম তার কোনোটিই দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। এর ফলে আগামী বছরগুলোতে এ শিল্পটি দ্রুত গতিতে অগ্রসর হওয়ার পরিবর্তে আরও কঠিন সময় অতিক্রম করবে, যা সার্বিকভাবে দেশের ডিজিটাইজেশনের গতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
 
এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.) বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের যে অবদান এবং এই খাতে যে কর ব্যবস্থা বিদ্যমান তার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা খুব জরুরি। তদুপরি, আমরা যখন উন্নততর প্রযুক্তিতে যুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করছি তখন বর্তমান কর কাঠামো ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে। আমরা আশা করি সরকার আমাদের প্রস্তাবগুলিতে পুনর্বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটের সংস্কার করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৯ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২১
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।