সিরাজগঞ্জ: যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। আর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুরে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন।
এদিকে ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে অঞ্চলের শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।
যথাযথভাবে নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্পের কাজ শুরু না করাকে দায়ি করছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। জালালপুর উত্তরপাড়ার আরিস আলী, মন্টু, আফান, চাঁন মিয়া, মজিবর, আব্দুস সালাম, ওমর আলী, আবু হানিফ, পলাশ মণ্ডল, বাবু, সাদ্দাম, শান্তা মিয়া, গোলাম মোস্তফা, আব্দুল আলীম, রহিমা খাতুন ও জীবনসহ অনেকের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে গাছপালা ও জমি-জমাও চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষগুলো নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছে। তারা কোথায় থাকবে, কোথায় যাবে তার নিশ্চয়তা নেই।
ভাঙনকবলিতরা জানান, ভাঙনের তীব্রতা এতই বেশি যে এলাকাবাসী ঘরবাড়ি সরানোরও সময় পাওয়া যাচ্ছে না। চোখের পলকে তাদের সহায় সম্বল গ্রাস করে নিচ্ছে প্রমত্তা যমুনা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ না করায় বাড়িঘর জমিজমা সব নদীর মধ্যে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যমুনার ভাঙন থেকে জালালপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাকে রক্ষা করতে ২০২১ সালে ৬৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনার পশ্চিত তীরের ৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিরাজগঞ্জ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও পরবর্তীকালে কাজ বন্ধ করে দেন তারা। এ কারণেই ভাঙন থেকে মুক্ত হচ্ছে না এই অঞ্চল।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মহির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, যমুনার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই নদী তীরবর্তী মানুষ বাড়িঘর ও জমি-জমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। গত এক সপ্তাহে ৫০টির মতো বাড়িঘর বিলীন হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বেলকুচি-শাহজাদপুর অঞ্চল) মিল্টন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, যমুনার পানি হঠাৎ করে বাড়তে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) থেকে জালালপুর অঞ্চলে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ বছর দফায় দফায় যমুনার পানি হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ভাঙন হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২২
এসআরএস