ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ফেনীতে ফসলের মাঠে আঘাত, সতর্কাবস্থায় প্রশাসন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ফেনীতে ফসলের মাঠে আঘাত, সতর্কাবস্থায় প্রশাসন

ফেনী: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে ফেনীর উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলাসহ সারা জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।



সোনাগাজীর উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়া বইছে। বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়ার ফলে ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাঠের ধান। উপজেলার জেলেপাড়া, আদর্শ গ্রাম, মুহুরী প্রজেক্ট, ধান গবেষণা ও সোনাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় মাঠের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গেছে।

ইতোমধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ফেনী জেলা প্রশাসন। ফেনীর সোনাগাজীর উপকূলে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিদ্যুৎ, ফায়ার, সিপিপি, স্বাস্থ্য বিভাগ, বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনেরসহ সব বিভাগ শুধু প্রস্তুত নয় বরং স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বপালন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আব সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, ‘দুর্যোগের চলাকালীন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় খাবারের সুসম বণ্টন, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।  
এছাড়া উপজেলার সব সরকারি কর্মকর্তার ছুটি বাতিল, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব দূর হাওয়া আগ পর্যন্ত মাঠ না ছাড়া নিদর্শন দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা জেলা প্রশাসক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় এসব নির্দেশনা দেন।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, ঘর-বাড়ি ও সম্পদ ছেড়ে লোকজন আসতে চায় না, লোকজনের ইচ্ছে থাকুন আর না থাকুক সকলকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবশ্যই আসতে হবে। দুর্যোগের সম্পদের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে মানুষ ও পশুপাখি।  

দুর্যোগের আঘাত হানার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ (১০ নাম্বার সংকেত) বিবেচনা করে স্বেচ্ছাসেবক, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সিপিবিসহ সবার প্রথম দায়িত্ব লোকজন ও গৃহপালিত পশুকে আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে আসা।  গাছপালা পড়ে যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ যেনো তাৎক্ষণিক সরিয়ে পেলতে পারে সেজন্য কুঠার ও করাতসহ নানা সরঞ্জামসহ সুনির্দিষ্ট টিম কাজ করতে হবে। এছাড়াও উপজেলা সব সরকার কর্মকর্তা নিজ নিজ দায়িত্বে থাকবে এবং মোবাইল ফোন খোলা রাখতে হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় উপজেলা অন্যান্যরা বক্তব্যে বলেন, জীবন-জীবিকায় জীবন আগে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সচেতনতাসহ সবদিক থেকে সব জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবক ও দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ঝুঁকির আওতায় থাকা লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মনজুরুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান।  

সভায় বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক ড. মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, পৌরমেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাশকুর রহমান, উপজেলা বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা, চরচান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন, সোনাগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান উম্মে রুমা, আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সোনাগাজীর ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের সব চেয়ারম্যান, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা।

দুর্যোগ মোকাবিলায় বরাদ্দ:

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম মনজুরুল হক জানান, দুর্যোগ মোকাবিলার উপকূলবাসী জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাল ১০ কেজি, ডাল ১ কেজি, তেল ১ লিটার, চিনি ১ কেজি, আয়োডিন যুক্ত লবণ ১ কেজি, মরিচ ও হলুদ গুড়া ২০০ গ্রামের সমন্বয়ে ৪শ প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ১৫০ কাউন ড্রাই কেক, ১৫০ কার্টন বিস্কুট দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।