ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আদালত

ডিএমপি

ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ বিধিমালার রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৬
 ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ বিধিমালার রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ

ঢাকা: ‘ঢাকা মহানগর পুলিশ (নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা) বিধিমালা ২০০৬’ এর ৪ এর খ ধারার একটি অংশ নিয়ে জারি করা রুল আগামী ৩১ মের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

 

ওই রুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুর রহমান ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৭ মার্চ বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।

রুলে ‘ঢাকা মহানগর পুলিশ (নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা) বিধিমালা-২০০৬’ এর ৪ এর খ ধারার একটি অংশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন। এ বিধিমালা দেখিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকায় সব বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।

আদেশের পর একরামুল হক টুটুল বলেন, ভাড়াটিয়ার তথ্য চাওয়া নিয়ে  একটি রিট এর আগে খারিজ হয়েছিলো। পরে আরেকটি বেঞ্চ রুল দেন। একই বিষয়ে দুই রকম আদেশ চলতে পারে না। এ কারণে রাষ্ট্রপক্ষ সে রুলের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ ২৭ মার্চের রুলটি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

২৭ মার্চ রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী অনীক আর হক বলেন, বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি রিট  খারিজ হয়েছিলো। ওই রিটের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ ডিএমপির ওই বিধিমালা অধীনে তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশ (নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা) বিধিমালা-২০০৬’ এর ৪ এর খ ধারায় বলা হয়েছে, ‘মহানগরীর কোনো এলাকাতে কোনো অপরাধ ঘটলে পুলিশ দ্রুত যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারে’। আমরা এ উপ ধারার ‘যেকোনো’ শব্দটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেছি। এ বিধান বলে বাড়ির মালিকের মাধ্যমে ভাড়াটিয়ার ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য চেয়ে ফরম বিলি করছে। কিন্তু এই বিধানের ক্ষমতা বলে একজন ব্যক্তির সব ব্যক্তিগত তথ্য পুলিশ চাইতে পারে না। কারণ, ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ দ্রুত যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে। ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়ায় নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের  করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী। তারা হলেন- আইনুন নাহার সিদ্দিকা, এস এম এনামুল হক ও অমিত দাশগুপ্ত।    

এর আগে গত ১৩ মার্চ ঢাকা মহানগর এলাকায় নাগরিকদের তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহে বন্ধে করা অন্য একটি রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
গত ০৩ মার্চ দুপুরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এরপর শুনানি শেষে গত ০৮ মার্চ এ রিটের আদেশের জন্য ১৩ মার্চ নির্ধারণ করেছিলেন হাইকোর্ট।
 
 
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে তথ্য চাওয়া তাদের আইনগত এখতিয়ারে পড়ে না। এভাবে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ার মতো কোনো আইনি সুযোগও পুলিশের নেই। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিট পুলিশিং নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদমাধ্যম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ১৫ মার্চের মধ্যে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। রাজধানীর সব বাসায় ফরম পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে অনেক ফরম ফেরত পেয়েছে, অনেক ফরম পায়নি। যা ১৫ মার্চের মধ্যে শেষ হবে। পরে অবশ্য আরো সময় বাড়ানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।