ম্যাচটিতে সাকিবরা হেরেছেন সত্যি, কিন্তু অনেক কিছুই পাওয়ার আছে। টি-টোয়েন্টিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এটাই টাইগারদের দলীয় সর্বোচ্চ।
প্রাপ্তির শেষ এখানেই নয়। এই ম্যাচ দিয়েই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন টাইগার ওপেনার সৌম্য সরকার। ৩১ বলে তার করা ৪৭ রানের পুরোটুকু জুড়েই হারিয়ে যাওয়া সেই সৌম্যকে দেখা গেছে। ছোট সাইফউদ্দিন ও মিরাজের বড় কিছু করার প্রচেষ্টাও নিশ্চয়ই কারো চোখ এড়িয়ে যায়নি। পুরো দ. আফ্রিকা সিরিজে ম্লান টাইগাররা টিম হিসেবে এই ম্যাচ দিয়েই স্বরূপে ফিরেছেন, একথা হয়তো বাতুলতা হবে না।
তবে হতাশার কথা হলো, ব্যাটসম্যানদের এমন প্রচেষ্টার দিনে যথারীতি ব্যাকস্ট্রিট বয়েজের ভূমিকায় ছিলেন টাইগার বোলাররা। শফিউল, তাসকিনদের নির্বিষ বলই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। কী মারটাই না খেলেন এই দু্ই পেসার। তাসকিন আহমেদ দুই ওভার বল করে দিয়েছেন ২১ রান। আর শফিউলের কথাতো বলাই বাহুল্য। সমান সংখ্যাক ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩৩ রান! কুইন্টন ডি কক ও ডি ভিলিয়ার্সরা রীতিমতো স্টিম রোলার চালিয়েছেন এই দুই পেসারের ওপর। কার্যকর ডেলিভারির নূন্যতম প্রচেষ্টাও তাদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল। টি-টোয়েন্টি ফরমেটে ম্যাচের ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে দুই থেকে তিনটি ভালো ডেলিভারিই যথেষ্ট। এই বাস্তবতা তারা বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে উপলব্ধি করলেও মাঠে তার লেশমাত্র দেখা মেলে না।
শেষমেষ দোষ গিয়ে পড়ে কোচের ঘাড়ে। দুঃখই লাগে যখন কোর্টনি ওয়ালশের মতো হাই প্রোফাইল কোচ পেয়েও বোলাররা তাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। দিনের পর দিন এমন বোলিং দৈন্যতা প্রশ্নের উদ্রেক করে তাদের যোগ্যতা নিয়ে। যদি যোগ্যই হন তাহলে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের উঠতি পরাশক্তির তকমাটিকে তারা এভাবে হারাতে দিতে পারেন না। টেস্ট সিরিজ হারের পর অন্তত প্রিয় ফরমেট ওয়ানডেতে ঠিকই হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারতো বাংলাদেশ। বোলারদের ব্যর্থতায় সেটা হয়নি। এবার শঙ্কা টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশের।
ক্রিকেট এমনই এক খেলা যা নিয়ে আগেই কিছু বলা সমীচিন নয়। ইতিহাস স্বাক্ষী, ম্যাচ নিয়ে বিগত দিনগুলোতে বড় বড় বোদ্ধাদের করা ভবিষ্যতবানীও দিন শেষে ক্রিকেটীয় বাস্তবতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই সফরকারীদের সামনে আরেকটি হোয়াইটওয়াশ অপেক্ষা করছে একথা থেকে আপাতত বিরত থাকাই শ্রেয়।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে একটু চেষ্টা করলেই দ. আফ্রিকা সফরে জয় নামক সোনার হরিণের দেখা টাইগাররা পেতেই পারতেন। সেটা যখন হয়নি তাহলে শেষটিতে নিশ্চয়ই হবে। এমন আশা তো আর অমূলক নয়। কেননা তারাই আশা করতে শিখিয়েছেন। তাই আবারও সেই আশাতেই বুক বাঁধা। সেই আশাতেই স্বপ্ন বোনা। হোক না শেষটা ভালো।
পচেফস্ট্রমে টাইগারদের ‘সব ভালো’র এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে রোববার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি