ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ক্রিকেটপ্রেমীদের শহরে রহস্যঘেরা নীরবতা!

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
ক্রিকেটপ্রেমীদের শহরে রহস্যঘেরা নীরবতা! সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডয়ামের টিকিট কাউন্টারে কোনো ভিড় নেই/ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: সিলেটের মানুষ তুমুল ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবেই পরিচিত। সিলেটে ক্রিকেট মানেই দর্শক ভর্তি গ্যালারি। আর বাংলাদেশ দলের খেলা হলে তো কথাই নেই। টাইগারদের খেলা মানেই দর্শক উন্মাদনা। টিকিট কাউন্টারে ক্রীড়ামোদীদের দীর্ঘ সারি। এমন দৃশ্য কেবল সিলেটেই দেখা মিলেছে বিগত দিনে।

কিন্তু এবার যেন সিলেটে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহের ছিটেফোটাও নেই। মাশরাফি, মুশফিকদের বরণে সিলেটে দেখা যায়নি শোভাযাত্রা।

খেলা নিয়ে ক্রীড়ামোদীদের মধ্যে নেই আলোচনা। টিকিট কিনতে কাউন্টারে নেই ভিড়।  

অথচ রাত পোহালেই রোববার (০১ মার্চ) শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ। এটাই ‘অধিনায়ক’ মাশরাফির শেষ সিরিজ! এমন আবেগের সিরিজ ঘিরে বর্ণিল আয়োজন হওয়ার কথা। দর্শকদের ঢেউ আছড়ে পড়ার কথা স্টেডিয়াম অভিমুখে। কিন্তু এসবের কোনো রেশ নেই। খেলা নিয়ে এবার দর্শকের আগ্রহ কম এবং টিকিট কিনতে আগ্রহ নেই তেমন।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও জেলা স্টেডিয়ামের বুথ থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা। ওয়েস্টার্ন ও গ্রিন হিল গ্যালারি ১০০ টাকা করে। ইস্টার্ন গ্যালারির টিকিট ১৫০ টাকা। ক্লাব হাউস ৩০০ টাকা। আর গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের টিকিট মূল্য রাখা হচ্ছে ১ হাজার টাকা। অথচ বিপিএল’র খেলায় টিকিটের মূল্য দ্বিগুণ ছিল। এরপরও টিকিট ক্রয়ে দেখা মিলছে না ক্রিকেটপ্রেমীদের। যেন খেলা দেখার উৎসাহে ভাটা পড়েছে।  

তবে বিষয়টি  ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন ক্রিকেটভক্তরা। তারা বলছেন, এবার অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর নামে করা বিপিএলও ছিল অগোছালো। সিলেটের ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম পাল্টে রাখা হয়েছিল সিলেট থান্ডার। তার সঙ্গে সিলেটের সংশ্লিষ্টতাও রাখা হয়নি। যে কারণে মানুষের আগ্রহে ভাটা পড়েছে।

সিলেটের ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি মান্না চৌধুরী বলেন, সিলেটে সব সময় খেলা হয় না। খেলা হলেও সবার অজানায় থাকে। এরপরও যেকোনো খেলার আগে প্রচার-প্রচারণা উচিত ছিল। এবার সেই প্রচারণার কিংবা ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়নি।

তিনি বলেন, এবার সিলেটে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলাটা প্রায় একপেশে হতে পারে। যে কারণে দর্শক ভাটা থাকতেই পারে। তবে নিজ দেশের খেলা এবং অধিনায়ক মাশরাফির শেষ সিরিজ বলা হচ্ছে। সেহেতু দর্শক হওয়ার কথা। আর এমনিতে সিলেট খেলা হলে দর্শক হয়। কিন্তু এবার এমন কেন হচ্ছে। খেলার বিষয়ে মানুষকে জানান দেওয়া উচিত ‍ছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার বিকাল পর্যন্ত স্টেডিয়ামের কাউন্টার ফাঁকা। মাঝে-মধ্যে একজন-দুজন করে আসছেন টিকিট কিনতে। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের ম্যাচে উপচে পড়া যে ভিড় যে প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তা চোখে পড়েনি।

এদিন সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ও জেলা স্টেডিয়ামের টিকিট বুথে টিকিটের ক্রেতা একেবারে ছিল না বললেই চলে। মানুষের ভিড় না থাকায় পাশেই খোশগল্পে সময় পার করছেন পুলিশ সদস্যরা। একইভাবে বুথে অলস সময় কাটাতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। ক্রেতা কম থাকায় ব্যস্ততা নেই।

অথচ বিগত আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে বা বিপিএলে সিলেট পর্বে টিকিট ছিল সোনার হরিণ। কালো বাজারেও টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু এবার সম্ভবত এই দৃশ্যটির দেখা মিলছে না সিলেটে।

এ বিষয়ে জানতে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মারিয়া চৌধুরী মাম্মির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।  

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে দুই দলের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ মাঠে গড়াবে  ১, ২ ও ৬ মার্চ। তিনটিই দিবারাত্রির ম্যাচ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
এনইউ/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।