ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রমজানের আগেই অস্থির খেজুরের বাজার 

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
রমজানের আগেই অস্থির খেজুরের বাজার 

চট্টগ্রাম: ইফতারে গুরুত্বপূর্ণ ফল খেজুর। রমজানের মাসখানেক আগেই খেজুরের আড়ত ও পাইকারি বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।

ডলার সংকট, বুকিং রেট ও পরিবহন ব্যয় বেশি ইত্যাদি নানা কারণ দেখিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে খেজুরের। গত বছর স্টেশন রোডের ফলমণ্ডিতে ভালো মানের যে আজওয়া, মরিয়ম খেজুর ৫০০-৭০০ টাকা পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে তা এখন দেড় হাজার টাকার বেশি।
 

সরেজমিন দেখা গেছে, হাটহাজারী বড় মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মাদ্রাসা ও বাজার কেন্দ্রিক স্থায়ী খেজুরের দোকান, মসজিদ কেন্দ্রিক ভাসমান খেজুরের দোকানগুলোতে বিক্রি কমে গেছে। করোনার পর রিকশাভ্যানে, ফুটপাতে যেভাবে খেজুর বিক্রি হয়েছিল তা-ও এখন চোখে পড়ে না। কারণ হিসেবে দোকানিরা বলছেন, দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কম কিনছেন। তবে সুপারশপ, বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, পাইকারি দোকান ও আড়তে ভালো মানের খেজুরের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

বিক্রেতারা জানান, রমজানে সচরাচর কম দামি ও মধ্যম মানের খেজুর বেশি পরিমাণে আমদানি ও বিক্রি হয়। এমনিতে শবে মেরাজ, শবে বরাত, মহরমসহ বিভিন্ন উপলক্ষে নফল রোজাদাররাও ইফতারে খেজুর কিনে থাকেন। তবে ধর্মপ্রাণ অনেক রোজাদার সৌদি আরবের মদিনায় উৎপাদিত আজোয়া খেজুর কিনতে চান। আমদানি ছাড়াও হাজি, ওমরা হজ পালনকারী, মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে আসা প্রবাসীরাও বিপুল পরিমাণ খেজুর এনে থাকেন।  

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে জাহাজে যেসব খেজুর আমদানি হয় তার ছাড়পত্র দিয়ে থাকে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। কেন্দ্রের প্রধান উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বাংলানিউজকে জানান, ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাত মাসে খেজুর আমদানি হয়েছে ৪৪ হাজার ৬৩৪ টন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে খেজুর আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ১৬৯ টন, গত ডিসেম্বরে এসেছে ৬ হাজার ১৬ টন। আরও খেজুর পাইপলাইনে আছে।  

সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খেজুর এসেছিল ৮৮ হাজার ৯৬১ টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আসে ৮৪ হাজার ১৫১ টন।  

একজন আমদানিকারক জানান, খেজুর আমদানি কমার অনেক কারণ আছে। প্রথমত খেজুরের চালানের শুল্কায়নে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন মানভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৭৫ টাকা পর্যন্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে। একসময় ভালো মন্দ সব খেজুরের শুল্কহার ছিল নামে মাত্র। ডলারের দাম বেড়েছে, খেজুরের বুকিং রেট বেড়েছে, ফ্রেইট বেড়েছে, রেফার কনটেইনারে খরচ, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। সব মিলে পড়তা পড়ছে বেশি।  

ফলমণ্ডির এরাবিয়ান ডেটসের স্বত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রমজানের ইফতারে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকলেও সারা বছর কিন্তু খেজুর মোটামুটি বিক্রি হয়। পুষ্টিগুণের কারণে নানাভাবে খেজুরের ভোক্তা বাড়ছে। আজওয়া, সুক্কারি, সাফাবি, সাগাই, মাবরুম, মেদজুল, আম্বার, জাহেদি বিভিন্ন জাতের খেজুর রপ্তানি করে মিসর, সৌদি আরব, ইরান, আলজেরিয়া, ইরাক। নানা কারণে খেজুরের দাম বেড়েছে। গত বছর রমজানে আমরা যে খেজুর ৫০০-৭০০ টাকা বিক্রি করেছিলাম তা এখন দেড় হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে কম দামি যে জাহেদি খেজুর ভোক্তা পর্যায়ে ১৫০-২০০ টাকা ছিল তা এখন আড়াইশ টাকা। আশাকরি রমজানে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।  

নগরের কাজীর দেউড়ি বাজারের ফলের দোকানে মান, জাত, আকার ভেদে খুচরায় খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা।   

>>ছোলা আমদানি স্বাভাবিক হলেও বাজার অস্থির

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।