ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কবিতা যদি হয় দেহ, আবৃত্তি প্রাণ: জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪
কবিতা যদি হয় দেহ, আবৃত্তি প্রাণ: জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ...

চট্টগ্রাম: কবিতা এক আশ্চর্য স্বপ্নময় ধ্বনি, আর আবৃত্তি তার প্রতিধ্বনি। কবির ভেতরকার আবেগ–অনুভূতি, উপলব্ধি ও নিজস্ব চিন্তা ভাবনাকে সুচারুভাবে ফুটিয়ে তোলেন একজন আবৃত্তি শিল্পী।

আবৃত্তি হচ্ছে শিল্পীর স্মৃতির ধারাবাহিক সবাক চিত্র। কবিতা যদি হয় দেহ, আবৃত্তি তার প্রাণ।
আবৃত্তি একটি শিল্প। কবি যে অনুভব থেকে শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে কবিতা রচনা করেন, তা শ্রুতি মাধুর্যে, বাচিক শৈলীতে শ্রোতার কাছে পৌঁছে দেন আবৃত্তিশিল্পী।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরের সিআরবি শিরীষতলায় অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন, বরেণ্য আবৃত্তি শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতিসত্তার বিকাশে এক অনবদ্য সংযোজন। পৃথিবীতে একমাত্র দেশ বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা।  

তিনি বলাতে পড়াতে ও লেখাতে ভাষাকে নষ্ট না করে আঞ্চলিক ভাষার পাশাপাশি অমিত ভাষায় বলা, লেখা এবং পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে মহান  মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আবৃত্তিশিল্পীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তারা তাদের ভাষার প্রয়োগ ও মুন্সিয়ানার মাধ্যমে সমাজে যেকোনো বার্তা সহজে পৌঁছে দিতে পারেন যা অন্যদের পক্ষে সম্ভব হয় না। দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নির্মাণ, জঙ্গিবাদী হামলাসহ মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের ওপর আঘাতকারী কালো শক্তির বিরুদ্ধে আবৃত্তিশিল্পীরা সব সময় রাজপথে নেমেছে প্রতিবাদী কণ্ঠে। মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পরাজিত শক্তিকে বধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।

সভাপতির বক্তব্যে কবি ওমর কায়সার বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কৃতির প্রায়োগিক শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো আবৃত্তি। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ সহ নানা রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পটভূমিতে আবৃত্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।  

তিনি আবৃত্তির মাধ্যমেই ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় আয়োজিত এ বইমেলা মঞ্চে মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেণ্য আবৃত্তি শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডালিয়া আহমেদ, বইমেলা কমিটির আহবায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু,  সম্মিলিত আবৃত্তি জোট চট্টগ্রামের সভাপতি  ফারুক তাহের।

আবৃত্তি পরিবেশন করে বোধন আবৃত্তি পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, উচ্চারণ আবৃত্তি কুঞ্জ, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, স্বদেশ আবৃত্তি সংগঠন, প্রমিতি সাংস্কৃতিক একাডেমি, শৈশব বাচিক চর্চা কেন্দ্র, দৃষ্টি চট্টগ্রাম, প্রত্যয় শিক্ষা সাংস্কৃতিক একাডেমি, একুশ মানবিক আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, স্পৃহা আবৃত্তি নীড়, বৈখরি আবৃত্তি আলয়, মুক্তধ্বনি আবৃত্তি সংসদ। আবৃত্তি করেন ডালিয়া আহমেদ, মসুম আজিজুল বসর, মিলি চৌধুরী ও প্রণব চৌধুরী।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে গণমাধ্যম সম্মিলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।