চট্টগ্রাম: নগরের ফিরিঙ্গি বাজারের গঙ্গা বাড়ি টেক পাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু পুড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন হরি কমল দাশের পরিবার। সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরের দিকে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।
হরি কমল দাশের মেয়ে অঙ্কিতা দাশ ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আগুনে পুড়ে গেছে অঙ্কিতার শিক্ষা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সব কাগজ। পুড়েছে তার স্বপ্নও।
শুধু অঙ্কিতা দাশের বই পুড়েনি, পুড়েছে তার বড় বোন কুয়াশা দাশের জন্য কেনা বিয়ের গহনা। আগুনে ছাই হয়েছে বিয়ের জন্য জমানো টাকাও। আগুনের ভয়াবহতা থেকে বের করতে পারেননি কোনো কিছুই।
রাতে কোথায় থাকবেন সেটিও এখন অনিশ্চিত হরি কমল পরিবারের। এ আগুনে হরি কমলের পরিবার ছাড়াও পুড়েছে আরও অনেকের।
অঙ্কিতা এনায়েত বাজার মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২৪ সালের জুনের শেষের দিকে তার এইচএসসি পরীক্ষা। অঙ্কিতার পরীক্ষার প্রস্তুতিও শেষের দিকে। এমন সময় অগ্নিকাণ্ডে তার সব বই পুড়ে গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া বই বুকে বিলাপ করছেন অঙ্কিতা। তার পাশেই বাবা-মা, বোনও। বাড়ির লোহার আর কংক্রিটের পিলার ছাড়া বাকি সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দুপুরের রান্না করা ভাতের আধপোড়া বাটিও পড়ে আছে এক কোণায়। শুধু অঙ্কিতার পরিবার নয়, তার পাশের অন্তত পাঁচটি পরিবারের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাদেরও একই অবস্থা। সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব তারা। খোলা আকাশের নিচেই এখন বসবাস এ পরিবারগুলোর।
অঙ্কিতা বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে রান্না ঘরের পাশ দিয়ে ধোঁয়া দেখা যায়। পরে কোনো কিছু বুঝতে উঠতেই আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে যায়। দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে আসতেই আগুন সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷ শত চেষ্টা করেও আর ঘরের ভেতর ঢোকা যায়নি। সব পুড়ে গেছে।
অঙ্কিতার বাবা হরি কমল দাশ চাকরি করেন একটি কারখানায় চাকরি করেন। দুপুরের খাবার খেতে এসেছিলেন তিনি। হরি কমল বাংলানিউজকে বলেন, দুপুরের ভাত খাওয়ার সময় হঠাৎ দেখি রান্না ঘরের পাশ থেকে ধোঁয়া আসছে৷ দুপুরের রান্না হয়েছে কিন্তু ভাত খাওয়া হয়নি। এরই মধ্যে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার বড় মেয়ের বিয়ের জন্য দুই ভরি গহনা কিনেছিলাম। সেগুলোও বের করতে পারিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৪
বিই/পিডি/টিসি