চট্টগ্রাম: নগরের চান্দগাঁও থানায় পুলিশ হেফাজতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলায় গ্রেপ্তার এসএম আসাদুজ্জামানের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
রোববার (২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম তৃতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আকতারের আদালত শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে বাকলিয়া থানার রাহাত্তালপুল এলাকা থেকে একই মামলা আসামি জসীম উদ্দীন ও গত ১২ ফেব্রুয়ারি নগরের চকবাজার এলাকা থেকে আসামি মো. লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খাঁন বাংলানিউজকে বলেন, অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলার আসামি এসএম আসাদুজ্জামানকে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামীর মোজাফফর নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে একইদিন আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। এই মামলায় আসামি এসএম আসাদুজ্জামানের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিকে আদালতের লিখিত আদেশ পেলে আগামীকাল (সোমবার) রিমান্ডে আনা হবে।
গত ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করলে থানায় মামলা রেকর্ড করার আদেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন- তৎকালীন চান্দগাঁও থানার ওসি মো. খাইরুল ইসলাম, এএসআই মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো.জসীম উদ্দীন, রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক (ডিডি) পদ থেকে অবসর নেন। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে গত ২৯ আগস্ট ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামে এক ব্যক্তি। আদালত মামলার শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ওইদিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। ফলে আসামিরা আদালতে হাজির হওয়ার কোনো সমন পাননি। এরপর মামলার পরবর্তী তারিখ দেন আদালত। ওই তারিখে মামলার বাদী হাজির না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু ওইদিনই আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে দেন। এরপর গত ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাহকে বাসা থেকে আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পর ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি