চট্টগ্রাম: মধু মাসের ফল লিচুর ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছে বাঁশখালীর জনপদে। উপজেলার কালীপুর, সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ি, গুণাগরি, পুকুরিয়া, জঙ্গল জলদি, জঙ্গল চাম্বল, পুঁইছড়িসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিক ও ঘরোয়াভাবে পাহাড়ি ও সমতল এলাকায় লিচুর ফলন হয়েছে।
লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে পাকা লিচু। পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, পৌরসভা সদর জলদী হয়ে বৈলছড়িসহ পাহাড়ি এলাকায়, সড়কের পাশে, বাড়ির আঙিনায়, লোকালয়ের বাগানে লিচুর ফলন হয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তর জানায়, বাঁশখালীর পুঁইছড়ি, চাম্বল, জলদী, কালীপুর, বৈলছড়ি, সাধনপুরের পাহাড়ি এলাকায় লিচু চাষ বেশি হয়। সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয় কালীপুরে। ২০২০ সালে ৬০০ হেক্টর, ২০২১ সালে ৭০০ হেক্টর, ২০২২ সালে ৭২০ হেক্টর, ২০২৩ সালে ৫৯০ হেক্টর, ২০২৪ সালে ৬৩০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে বীজের গাছ হয় ২০১-২২০টি। কলমের নতুন জাতের চারা হয় ২৬০টি।
উপজেলায় উন্নত জাতের কালীপুরী লিচু, বোম্বাই, চায়না-থ্রি, চায়না-টু, মোজাফ্ফরী লিচুর আবাদ হয়। ব্যবসায়িকভাবে চায়না-থ্রি ও চায়না-টু জাতের লিচু বেশি বিক্রি হয়। চায়না থ্রি জাতের লিচুর শাঁস বড়, ফলন আসে দেরিতে। কালীপুরী লিচুর শাঁস ছোট হলেও আগেই ফলন আসে।
কালীপুরের লিচু বাগান মালিক ও ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, চারটি বাগানের মধ্যে তিনটি লাগিয়ত দিয়েছি। এই সপ্তাহে বাজারে আসবে কালীপুরের লিচু। বর্তমানে কিছু লিচু বাজারে এসেছে, সেগুলো একশটি ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লিচু চাষি মোহাম্মদ হারুন বলেন, পাহাড়ি এলাকার বাগানগুলোতে ফলন বেশি হয়। গাছ থেকে লিচু ছেঁড়ার আগে পর্যন্ত বাগানের পরিচর্যা করতে হয়। প্রকৃতি অনুকূলে না থাকলে লিচুর ফলন কমে যায়। কালীপুরের লিচু সারাদেশেই যায়। প্রায় লিচু বাগান পাইকার ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়েছে। অনেকে মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে লিচু বিক্রি করে।
লিচুর পাইকার ব্যবসায়ী রহমত উল্লাহ বলেন, এ বছর ১ কানি লিচু বাগান ৫৫ হাজার টাকায় কিনেছি। বাগানে ৩০-৪০টা গাছ আছে। উপযুক্ত দাম পেলে লিচু বিক্রি করে ৮০-৯০ হাজার টাকা আয় হবে।
বাঁশখালীর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু সালেক বলেন, গরমে কিছু বাগানের লিচু ফেটে গেছে। বৃষ্টি-বাতাসে কিছু ঝড়ে গেছে। নিয়মিত বৃষ্টি না হলে লিচু আকারে ছোট হয়। চলতি বছর ৬৩০ হেক্টর লিচু চাষ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
এসি/টিসি