ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তান বিক্রি করে দিলেন বাবা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তান বিক্রি করে দিলেন বাবা  ...

চট্টগ্রাম: সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান মো. সাদ্দাম। সংসারে আছেন স্ত্রীসহ দুই কন্যা।

পুত্র সন্তানের আশায় তৃতীয়বারও জন্ম নেয় কন্যা সন্তান। পরপর তিন কন্যার জন্ম হওয়ায় সদ্যেজাত কন্যা সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন বাবা।
এ ঘটনা ঘটেছে রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগর ইউনিয়নে।

এ বিষয়ে পারভেজ হোসাইন নামের প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতালে বন্ধুর মাকে রক্ত দিতে যাই। পাশে এক মা তার সদ্যেজাত কন্যা সন্তানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিল। কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি জানালেন, তার স্বামী বাচ্চা বিক্রি করে দিচ্ছেন। বাচ্চার বাবার (সাদ্দাম) সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, হাসপাতালের বিলের টাকা দিতে না পারায় অন্যত্র বাচ্চাটিকে দিয়ে দিচ্ছেন তিনি।  

এ সময় পারভেজ চেষ্টা করেন টাকার ব্যবস্থা করে বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু বাবা রাজি না হওয়ায় তা পারেননি।  

জানা গেছে, গত ২৭ জুন রাতে অন্তঃসত্ত্বা সুমি ভর্তি হন চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতালে। ২৯ জুন দুপুরে সিজারের মাধ্যমে কন্যাসন্তান জন্ম দেন তিনি। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (২ জুন) বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাসপাতালের বিল বাবদ ১২ হাজার টাকা এবং ওষুধ বাবদ আরও ১০ হাজার টাকা বাকি ছিল।  

এদিকে, তৃতীয় কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ার পর থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন বাবা সাদ্দাম হোসেন। তার দাবি, অভাবের সংসারে সদ্যোজাত শিশুর জন্মের পর হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পারায় তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে টাকার বিনিময়ে নয়, ৫০ হাজার টাকা হাসপাতালের বিল ও চিকিৎসা বাবদ নিয়ে নিকটাত্মীয়ের কাছে কন্যাসন্তানকে দিয়েছেন বলে জানান সাদ্দাম।

মো. সাদ্দাম জানান, হাসপাতালের বিল এসেছে ১২ হাজার। ওষুধ খরচ এবং চিকিৎসকের বিল বাবদ আরও ১০ হাজার টাকা লেগেছে, যা আমার কাছে ছিল না। আমার আরও দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তৃতীয়টাও কন্যাসন্তান হওয়ায় বাধ্য হয়ে চিকিৎসা খরচ জোগাতে বাচ্চাকে খরচের বিনিময়ে নিঃসন্তান আত্মীয়কে দিয়েছি।  

মরিয়মনগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল কবির শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। বাচ্চাটি যাতে মায়ের কোল ফিরে পায় সে চেষ্টা করছি। বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেছি। আশা করছি একটি সমাধান আসবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৪
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।