চট্টগ্রাম: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী বলেছেন, সব সময় সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। এত সম্ভাবনাময় একটা জায়গা, কী নেই আমাদের! প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, পাহাড়, নদী, খাল সবকিছুই আছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নগরের চকবাজার দেবপাহাড় এলাকায় একটি হল রুমে ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরাম’র সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এবং অপার সম্ভাবনাময় হওয়া সত্ত্বেও শুধু যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া পিছিয়ে আছে বলে জানিয়ে সাবেক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যমকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিহার্য। আগে আমরা তিনটি স্তম্ভ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এখন চতুর্থ স্তম্ভ, অন্য তিনটি স্তম্ভের চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গণমাধ্যমের যে অবস্থান, সমাজে তার প্রভাব অন্য যেকোনো মাধ্যমের চাইতে অনেক বেশি। সাংবাদিকরা যদি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন, তাহলে সমাজ এগিয়ে যেতে বাধ্য।
গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ওসমান বলেন, গত ১৭ বছরের পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, টুটি তখনও চেপে ধরা হয়েছে, হয়তো আগামীতেও চেপে ধরা হবে। কিন্তু গত ১৭ বছরে যে সিচুয়েশনটা ছিল, সেটা থেকে কিছুটা হলেও আমরা মুক্তি পেয়েছি। এর মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটে গেছে, সেজন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে পেশাগত কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব।
তিনি বলেন, এখন সাতকানিয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের কথা শোনা যাচ্ছে। আমি যখন দেখি ফুটবল মাঠ ভাড়া করে খেলতে হচ্ছে, টার্ফ গড়ে উঠছে, তখন অবাক হই। আমরা ধানের জমিতে পিচ করে ক্রিকেট খেলেছি, ডাংগুলি খেলেছি। এখনকার ছেলেমেয়েরা খেলবে কোথায়? তাহলে কিশোর গ্যাং কেন মাথাচাড়া দেবে না।
উন্নয়নের জন্য শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে বেসরকারি খাতের উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওসমান বলেন, দেশের সমস্ত বড় বড় ব্যবসায়ীর অনেকেই সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার। তারা চাইলে এখানে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তুলতে পারতেন। সরকারিভাবে সবকিছু সম্ভব না, দরকার প্রাইভেট সেক্টরের উদ্যোগ।
সরাসরি রাজনীতিতে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকায় সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে মিছিল-মিটিংয়ে যাওয়াটা নৈতিকভাবে উচিত মনে করছি না। কিন্তু পরিস্থিতি আমাকে কোথায় নিয়ে যায়, আমি জানি না।
নিজের লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমপি-মন্ত্রী হওয়া আমার লক্ষ্য নয়। আমার একটাই লক্ষ্য, আমার বাবা (আবদুল গাফফার চৌধুরী) যে সুনাম অর্জন করেছেন, তা যেন আমার কোনো কারণে নষ্ট না হয়। মানুষের পাশে থেকে সম্মানটা ধরে রাখাই আমার উদ্দেশ্য।
সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এস এম রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখার, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মিজানুল ইসলাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ও সহসভাপতি সরওয়ার আমিন বাবুসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা।
এমআই/টিসি