কলকাতা: ৩০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে মৃত্যু ঘটেছে ১৬ বছরের কিশোর রোশন পানেরির। টানা ১১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে উদ্ধার করা হয় তার লাশ।
রোববার বিকাল ৪টায় হাওড়ার লিলুয়ার একসরায় ৩০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে যায় রোশন। উদ্ধার কাজে প্রথমে সার্চ ক্যামেরা নামানো হয়। ক্যামেরার মাধ্যমে দেহের অবস্থান বুঝে নেওয়া হয়। এরপরই নামানো হয় দু’জন পাতকুয়ো মিস্ত্রিকে। সেই পাতকুয়ো মিস্ত্রিরা প্রথমে উঠে আসেন। এরপরই ওই কিশোরকে তোলা হয়। হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রোববার বিকালে কুয়ো দেখতে গিয়ে হঠাত্ করে পাড় ভেঙে রোশন পানেরি পড়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা রোশন স্থানীয় একটি কয়লার দোকানে কাজ করতো বলে জানা গেছে। এরপর উদ্ধার কাজে নামেন দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলের একজন ডুবুরি।
পাতকুয়োর বের নরম হওয়ায় তা বারবারই ধসে পড়তে থাকে। কিন্তু ডুবুরি কুয়োয় নেমে কিশোরকে দেখতে পান। পরে কুয়োর পাশে একটি গর্ত খুঁড়ে কিশোরের দেহ উদ্ধারের ভাবনা চিন্তা শুরু করা হয়।
এ জন্য মেট্রোরেলের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যেই পাম্প করে এবং বালতি নামিয়ে কুয়োর পানি তোলারও চেষ্টা হয়। কিন্তু জলা এলাকা হওয়ায় আশপাশের থেকে পানি ঢুকে পড়তে থাকে।
এরপর বেশ কয়েকটি আংটা বেঁধে একটি দড়ি নামানো হয়। সেই আংটাতে কিশোরের লাশ আটকেছে বলে জানান দমকলকর্মীরা। কুয়োর ভেতরে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে বলে জানান উদ্ধারকারীরা। পরিস্থিতি সামলাতে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষে সেনাবাহিনীকে তৈরি থাকতে বলা হয়। তৈরি থাকতে বলা হয় বিএসএফকেও।
প্রয়োজনে মধ্যমগ্রামের বাদু থেকে বিএসএফের দল আনারও প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ছিলেন দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান, হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারও। যে বাড়ির জন্য কুয়ো তৈরি করা হয়েছিল, সেই বাড়ির মালিকের বেশ কিছু গাফিলতি রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে।
অভিযোগ, হাওড়ার একসরায় কুয়োয় পড়ে যাওয়া কিশোরকে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু প্রশাসনের তরফে তাদের নামতে দেওয়া হয়নি। এরপর দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে উদ্ধারের চেষ্টা।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর