কলকাতা: রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মূল্যবৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থার দাবিতে কলকাতায় তিনদিনের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করছে প্রধান বিরোধী জোট বামফ্রন্ট।
বুধবার বিকাল চারটায় রানী রাসমণি রোডে বামফ্রন্টের এ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল জোট সরকার উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে, উভয়ের নীতির জন্যই মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। খাদ্য নিরাপত্তা বিলে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বামপন্থিদের দেওয়া সংশোধনী গৃহীত হয়নি। এখন যেভাবে এই বিল পাস করানোর কথা বলা হচ্ছে তাতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। ”
তিনি বলেন, “পরিকল্পনা কমিশন দারিদ্র্যের যে মাপকাঠি দিয়েছে তাতে গরিবদের সর্বনাশ হবে। আমরা বামপন্থিরা এ পি এল –বি পি এল বিভাজন না করে সব গরিবের জন্য ২ রুপি কেজি দরে মাসে প্রতিটি পরিবারকে ৩৫ কেজি করে চালগম দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকার টাকার অভাবের অযুহাত দেখাচ্ছে। কিন্তু সৎ উদ্দেশ্য থাকলে এ কাজ করা সম্ভব। ”
তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যদি ধনীদের বছরে ৫ লক্ষ কোটি রুপির কর ছাড় দিতে পারে, তাহলে ৪০ হাজার কোটি রুপি অতিরিক্ত খরচ করে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারবে না কেন? এজন্যই আমাদের দেশব্যাপী আন্দোলন করতে হচ্ছে। দিল্লিতে পাঁচদিনের ধরনা কর্মসূচির সঙ্গে কলকাতাতেও ১ থেকে ৩ আগস্ট অবস্থান বিক্ষোভ ও সমাবেশ করা হচ্ছে। ”
সভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “একদিন বাজারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হাজির হলে অথবা সবজি চাষীদের ধমক দিলে জিনিসের দাম কমে যায় না। দাম কমানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী সত্যিই আন্তরিক হলে লজ্জা ছেড়ে বামপন্থিদের তোলা কার্যকর দাবিগুলোকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরুন। ”
তিনি বলেন, “পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর জন্য মূল দায় কেন্দ্রের। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকারের উচিত ছিলো পেট্রোল ও ডিজেল থেকে কর বাবদ অতিরিক্ত আয়কে পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট সরকারের মতো ছাড় দেওয়া। তা না করে রাজ্য সরকার জনগণের কাছে এই পকেটমারির ভাগ আদায় করছে। ”
বামফ্রন্টের এই বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিকেই মূল্যবৃদ্ধির জন্য সরাসরি দায়ী করার পাশাপাশি রাজ্য সরকারকেও একই নীতি অনুসরণ করে আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন।
এদিন বামফ্রন্টের এ অবস্থান কর্মসূচিতে কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের আহবায়ক দিলীপ সেন, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা মইনুদ্দিন শামস্, সি পি আই-র প্রবীর দেব, আর এস পি-র বিপ্লব সিদ্ধান্ত, আর সি পি আই-র সুভাষ রায়, সোসালিস্ট পার্টির নজরুল ইসলাম, ডি এস পি-র রতন আগরওয়াল, বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেসের উমেশ চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির শিবনাথ সিনহা, বামপন্থি নারী নেত্রী রেখা গোস্বামী, শ্যামশ্রী দাস, শিপ্রা ব্যানার্জি বক্তৃতা করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে ফের শুরু হয়েছে অবস্থান সমাবেশ। বিভিন্ন বামপন্থি গণ-সংগঠনগুলো বৃহস্পতিবারের সমাবেশে অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর