নয়াদিল্লি : ভারতে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস নেতৃত্বধীন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করে যোগগুরু বাবা রামদেব গ্রেফতার হলেন।
কালো টাকা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সোমবার সংসদের সামনে ধর্ণায় বসার উদ্দেশ্য সংসদ ভবনের দিকে রওনা দিয়েছিলেন তিনি।
এদিন সকালেই সংসদ ভবনের বাইরে ধর্ণায় বসার কথা জানিয়েছিলেন বাবা রামদেব। তার এই প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে সরকারের সঙ্গে রামদেবের সংঘাত দেখা দেয়। সংসদ ভবনে যাওয়ার আগেই রামদেব ও তাঁর সমর্থকদের গ্রেফতার করার জন্য ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
দিল্লি প্রশাসন জানিয়েছে, ধর্ণায় বসার কোনও অনুমতি রামদেবকে দেওয়া হয়নি। এখন রামলীলা ময়দানে অনশনে বসেছেন রামদেব। এখান থেকে রামদেব বেরোলেই তাকে ও তার সমর্থকদের আটক করবে পুলিশ। সেখান থেকে তাদের বাসে করে রাজধানী দিল্লির বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।
বেলা ২টা নাগাদ পুলিশ বাবা রামদেবকে রনজিৎ সিং ফ্লাইওভারের কাছে থেকে গ্রেফতার করে একটি বাসে তুলে দেয়। এই সময় তাঁর প্রায় ৫০০/৬০০ সমর্থক বাসটি ঘিরে রাখে। বেশ কয়েকজন বাসের ছাদে উঠে যায়। তারা দাবি করতে থাকে- তাদেরও বাবার সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লি পুলিশ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রবল ভীড়ের চাপে বাসটি আটকে যায়।
এদিন রামদেব তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, বসে থাকার সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার এই সরকারকে হঠাতে হবে। অনশন মঞ্চ থেকেই স্লোগান দিয়েছেন- ‘কংগ্রেস হঠাও, দেশ বাঁচাও’।
রামদেব জানান, প্রতিবাদ হবে অহিংস পথে। তিনি তাঁর সমর্থকদের সমাজবিরোধীদের প্ররোচনায় পা না দেওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সমাজবিরোধীদের প্ররোচনায় পা দিলে অশান্তি হবে। আমি আপনাদের সবাইকে আমাদের পরবর্তী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। তরুণদের নেতৃত্বে এখান থেকে সংসদভবনের দিকে যাত্রা শুরু করা হবে।
এদিকে, রামদেবের পরবর্তী আদেশের অপেক্ষায় রয়েছেন তার কয়েকশত সমর্থক। রামদেবের অনশণ মঞ্চ এদিন কার্যত রাজনৈতিক মঞ্চ হয়ে ওঠে ৷
বিজেপির সভাপতি নীতিন গডকড়ি ও জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদব উপস্থিত রয়েছেন সেখানে৷ রয়েছেন টিডিপির সাংসদও৷ এরআগে সুব্রহ্মমানিয়াম স্বামী ও শিরোমণি অকালি দলের কয়েকজন প্রতিনিধিও অনশন মঞ্চে এসে রামদেবকে সমর্থন জানিয়ে গিয়েছেন।
রোববার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে লেখা একটি চিঠিতে তাঁর দাবিগুলি জানিয়েছেন। এই দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে, বিদেশের ব্যাঙ্কগুলিতে জমানো কালো টাকা দেশে ফেরত আনা, একটি শক্তিশালী লোকপাল বিল প্রণয়ণ এবং নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-র প্রধান বাছাইয়ে স্বচ্ছ্ব প্রক্রিয়া প্রস্তুত করা।
রামদেব বলেছেন, নতুন করে সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং এক্ষেত্রে যদি সরকার যথাযথভাবে সাড়া না দেয়- তাহলে আগামীকাল থেকে বড় আন্দোলনের পথে যাবেন তারা।
বাংলাদেশ সময় : ১৬৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা : রাইসুল ইসলাম ও সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর
kumar.sarkerbd@gmail.com