আগরতলা (ত্রিপুরা): বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে যেন কোনোই পার্থক্য নেই। ভাষা, সংস্কৃতি সবই এক।
বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) নিজ দফতরে বসে বাংলানিউজের কাছে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছিলেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, আগরতলা শহরে কোনো যানজট নেই। নেই কোনো কোলাহল; যা ঢাকা শহরে নিত্যদিন আমরা দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। গা-সওয়া হয়ে গেছি ধুলোবালিতে।
মনিরুজ্জামান জানালেন, ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের একেবারে আত্মিক সম্পর্ক। এ রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, বাংলাদেশ নিয়ে তারা উচ্চাশা পোষণ করেন। বাংলাদেশের কারণে বাঙালিরা বিশ্বে এগিয়ে যাচ্ছে, যা নিয়ে ভারতের পিছিয়ে থাকা এ রাজ্যের মানুষদের দারুণ গর্ব।
সে কারণে ত্রিপুরায় পোস্টিং পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত তরুণ এ ফার্স্ট সেক্রেটারি। এখানকার মানুষের সব ধরনের সহযোগিতা পেয়ে কাজে উৎসাহ ও উদ্দীপনা পাচ্ছেন বলে জানান মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের ভিসা আবেদনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আবেদনের ভিত্তিতে এখন প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জনকে ভিসা ইস্যু করা হয়। সকালে আবেদন নিয়ে বিকেলেই ডেলিভারি দেওয়া হয়। আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে এখনও অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চালু হয়নি। অর্থাৎ প্রিন্টেট ফরম হাতে লিখেই পূরণ করে ভিসার আবেদন করতে হয়।
তিনি জানান, গড়ে প্রতিদিন ৪/৫ জন করে ডাবল এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করেন। এ আবেদনকারীরা মূলত আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বেনাপোল-পেট্রাপোল হয়ে কলকাতা বা অন্যখানে যান। হাইকমিশন থেকে তিন মাস ও ছয় মাসের মাল্টিপল ভিসা ইস্যু করা হয়।
বাংলাদেশ থেকেই বেশি পণ্য ত্রিপুরা রাজ্যে রফতানি করা হয় বলেও জানান মনিরুজ্জামান।
ত্রিপুরার মানুষের প্রশংসা করে ফার্স্ট সেক্রেটারি বলেন, ত্রিপুরাবাসী ও বাংলাদেশের মানুষের যে একই আত্মা, তা আমরা ১৯৭১ সালের ত্রিপুরার মানুষের আতিথেয়তা দেখেই টের পেয়েছি। সে সময় নিজেদের খাবারও তারা বাংলাদেশি শরণার্থীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।
১৯৭১ সালে ওই রাজ্যের ১৪ লাখ মানুষ হাসিমুখে ১৫ লাখ বাংলাদেশির পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখের যেমন ভাগিদার হয়েছেন, তেমনি বিজয়ের আনন্দেও শামিল হয়েছেন তারা।
এখানে যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেই বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকরা আমন্ত্রিত হন। তেমনি ঢাকায় কোনো অনুষ্ঠান হলেই ডাক পড়ে এপার বাংলার মানুষদেরও।
আগরতলা বিমান বন্দরের দুই কিলোমিটার দূরেই বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমানা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
এসএস/টিআই/এবি