মধ্য মশালডাঙা (কুচবিহার) থেকে: সকালে উঠেই একসঙ্গে এতোগুলো ক্যামেরার তাক করা লেন্স আর ফ্লাশের ঝলকানি আগে কোনো দিন দেখেনি ছিটমহলের মানুষরা। গোটা বিশ্বের মিডিয়া বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) হাজির হয়েছে ছিটমহলে।
এর আগেও কিছু মিডিয়া এসেছে। ছবিও তুলেছে, তবে তখন ছিলেন হাতে গোনা একজন বা দুইজন সাংবাদিক। কখনো কখনো নেতা মন্ত্রীরা এসেছেন ছিটমহল পরিদর্শনে, তখনও মিডিয়া এসেছে। কিন্তু কখনোই এই সাধারণ মানুষগুলোর দিকে তাক করে ঝলকে ওঠেনি ফ্লাশ। সেই সময় কেউ তাদের ক্যামেরার সামনে বলতেও বলেনি তাদের অসহায় অবস্থার কথা। তাই আজ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে বেশ অবাক লাগছে তাদের।
বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা। ভারতের সবকটি সংবাদ মাধ্যমতো আছেই, আছেন প্রতিবেশী দেশের সাংবাদিকরাও। শুধু তাই নয়, ছিট মহলে হাজির প্রায় বিশ্বের প্রতিটি দেশের সাংবাদিকরা।
নানা দেশ থেকে আশা সাংবাদিকদের ক্যামেরা আর যন্ত্রপাতির ভিড়ে কিছুটা অবাক এখানকার শিশুরাও। ভয়ে ভয়ে একটু দূরেই থাকছে তারা এই অচেনা চেহারার মানুষগুলোর। তাদের যন্ত্রপাতির দিকে কেউ কেউ সাহস করে দুই পা এগোচ্ছে আবার পিছিয়েও আসছে।
যায়গায় যায়গায় ভিড়, ক্যামেরায় উঠছে ছবি, কোলের শিশুরাও বুঝতে পেরেছে রোজকার আর পাঁচটা দিনের মত সাধারণ নয় এই দিনটা। আক্ষেপ আছে বয়স্কদের গলায়। এতদিন এতো গুরুত্ব দিয়ে কেউ খবর রাখেনি। ৬৮ বছর ঠিকানাহীন হয়ে বাঁচার সময় না ছিল এতো প্রচার, না ছিল এত উৎসাহ।
তবুও খুশি ছিটমহলের বাসিন্দারা। অবশেষে তাদের লড়াই, তাদের সংগ্রাম, তাদের আন্দোলন সফল হতে চলেছে। তাই মন উজাড় করে অক্লান্তভাবে লড়াইয়ের গল্প শোনাচ্ছেন ছিটমহলের মানুষরা। গোটা বিশ্ব আজ তাদের কথা শুনতে আগ্রহী, এটাই তাদের খুশির বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
ভিএস/জেডএম