ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

জঙ্গির সাথে নামের মিল

মার্চ মাসে মুক্তি পেতে পারে বাংলাদেশি মিল্টন

রক্তিম দাশ, ব্যুরো চিফ, কলকাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১২
মার্চ মাসে মুক্তি পেতে পারে বাংলাদেশি মিল্টন

কলকাতা : নামের মিল থাকায় পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলে ১০ বছর ধরে আটক রয়েছেন বাংলাদেশি যুবক আসিফ ইকবাল মিল্টন। পশ্চিমবঙ্গের কেএলও জঙ্গি মিহির দাস ওরফে মিল্টন এর সঙ্গে নামের মিল থাকার জন্য তাকে আটক করা হয়।

তার মুক্তি পেতে আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।  

শনিবার বাংলানিউজকে ফোনে একথা জানিয়েছেন মিল্টনের আইনজীবী আবদুল জলিল।

এদিকে, মিল্টন যাতে দ্রুত ছাড়া পান সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহন গান্ধী।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি বৃহস্পতিবার জানতে পেরেছি। এ নিয়ে কোচবিহার জেলের সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে যতটা সাহায্য প্রয়োজন সবটুকু করার চেষ্টা করা হবে।

আবদুল জলিল বলেন, কোচবিহার আদালতে বিচারক না থাকায় মামলাটির শুনানি হতে দেরি হয়েছে। আগামী মার্চে আবার মামলাটি আদালতে উঠবে। এরপরই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।

বাংলানিউজের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশের কামা‍ আঙারিয়া থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে টলিউডের নায়িকা রূপা গাঙ্গুলি নাইট দেখতে এসে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে মিল্টন। ওই দিন মোট ১৮ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারমধ্যে ১৭ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বিএসএফ তাকে না ছেড়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কোচবিহার, মেখলিগঞ্জ ও তুফানগঞ্জ জেলে ৬১ দিন বেআইনি অনুপ্রবেশের দায়ে সাজা কাটায় মিল্টন। তাকে বিচারক এই সাজার সঙ্গে ৩০০ রুপি জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১০ দিন জেল দেয়।

২০০১ সালের ২৭ ডিসেম্বর কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ তাকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার জন্য মেখলিগঞ্জে নিয়ে যায়। কিন্তু তাকে পুশব্যাক করার বদলে মেখলিগঞ্জ থানার তৎকালীন সিআই মেঘলাল সরকারের নির্দেশে তাকে ফের গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগ আনা হয়।

পুলিশের অভিযোগ ছিল, মিল্টন আসলে কেএলও শীর্ষ জঙ্গি মিহির দাস ওরফে মিল্টন। শুধুমাত্র মিল্টন নামটি থাকার কারণে এই বাংলাদেশি ছাত্রটির জীবনে নেমে এলো অন্ধকার।

এদিকে যাকে নিয়ে এই সন্দেহ সেই কেএলও জঙ্গি বর্তমানে জামিন পেয়ে বাইরে আছেন। তিনি বলেছেন, ওই মিল্টন যে কেএলও জঙ্গি নয়, তা আমি বিচারককে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা আমল দেননি। আমি তার মুক্তি চাই।

আবদুল জলিল বলেন, মিল্টনের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা হয়েছিল, যার মধ্যে ৫টি খারিজ হয়ে গেছে। বাকি ১টি মামলা মার্চে আদালতে উঠবে।

এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে পুলিশ আধিকারিক মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন সেই সিআই মেঘলাল সরকার বর্তমানে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন।

এরই মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন মিল্টনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন। মিল্টনের মুক্তির প্রতিক্ষায় এখন দিন গুনছেন বাংলাদেশে তার মা মাজিদা বেগম।

বাংলাদেশ সময় : ০৯৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।