কলকাতা: মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর কাছে শুক্রবার আত্মসমর্পণ করলেন রাজ্যে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষনেত্রী সুচিত্রা মাহাতো।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর মাওবাদীদের শীর্ষ নেতা কিষেণজীর মৃত্যুর পর থেকে সুচিত্রা মাহাতর শারীরিক অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছিল, বুড়িশোলের জঙ্গলে এনকাউন্টারে গুলি লাগলেও পালাতে পেরেছিলেন সুচিত্রা। তারপর থেকেই তার খোঁজ চালাচ্ছিল পুলিশ।
মহাকরণে সুচিত্রা ও তার স্বামী প্রবীর গড়াইকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারের প্যাকেজ অনুযায়ী সুচিত্রা মাহাতোকে সব ধরনের সাহায্য করা হবে। দেওয়া হবে নিরাপত্তাও।
সুচিত্রা সম্প্রতি বিয়ে করেছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এখনও যারা অস্ত্র নিয়ে আন্দোলন করছেন, তাদেরও মূলস্রোতে ফিরে আসার আবেদন জানান মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সুচিত্রা এখন অসুস্থ। ওর গুলি লেগেছিল। কোমরেও চোট আছে। ওকে কেউ বাড়তি প্রশ্ন করবেন না। ’
সুচিত্রা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন মাওবাদীদের জীবন কাটিয়েছি। এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাই। মাওবাদ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার লক্ষ্যেই আত্মসমর্পণ করেছি। ’
তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, মাওবাদীদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর মূলস্রোতে ফেরার যে আহ্বান ছিল, তাতে সাড়া দিয়েই তিনি আইবি’র কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
সুচিত্রা আরো দাবি করেন, ‘আগে থেকে ধরা পড়িনি। গ্রামে ছিলাম। ’
তার আত্মসমর্পণের ঠিক আগের অবস্থান নিয়েও সুচিত্রা বিশেষ মুখ খোলেননি। তবে তার স্বামী প্রবীর গড়াই বলেন, তার স্ত্রীর আত্মসমর্পণের পেছনে ‘অনেক কারণ’ রয়েছে।
১৯৯৫ সালে মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন সুচিত্রা মাহাতো। তখন এমসিসি’র সদস্য ছিলেন তিনি। এরপর মাও নেতা শশধর মাহাতোর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। শুরু থেকেই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছিলেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গে তিনিই ছিলেন মাওবাদীদের মহিলা সংগঠনের শীর্ষ নেত্রী। ফলে, তার আত্মসমর্পণে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা খেল এ রাজ্যের মাওবাদী আন্দোলন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১২