ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

রাজ্যসভার মনোনয়নপত্র নিয়ে তৃণমূল-কংগ্রেস সংঘাত প্রকাশ্যে

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১২

কলকাতা : আগামী ৩০ মার্চ রাজ্যসভার নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ৪ প্রার্থী। শনিবার বিধানসভা ভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উপস্থিতিতে মুকুল রায়, কুনাল ঘোষ, বিবেক গুপ্ত ও ড. নাজিমূল হক মনোনয়নপত্র পেশ করেন।

অন্যদিকে রাজ্যসভার শনিবারই রাজ্যসভা ভোটের চতুর্থ আসনের জন্য কংগ্রেস নেত্রী শুভ্রা ঘোষ মনোনয়নপত্র তোলায় কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সংঘাত ফের প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে।
 
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখার্জি, ফরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক প্রমুখ।

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারই প্রথম বিধানসভার সদস্য হিসাবে তিনি রাজ্যসভার নির্বাচনে অংশ নেবেন। দলীয় প্রার্থীদের উৎসাহ দিতেই তিনি উপস্থিত ছিলেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূলের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র পেশ করা ব্যক্তিদের মধ্যে মুকুল রায় সক্রিয় রাজনীতিবিদ হলেও বাকি ৩ জন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত। কুনাল ঘোষ সংবাদ প্রতিদিনের সহযোগী সম্পাদক, বিবেক গুপ্ত হিন্দি দৈনিক সংমার্গের কর্ণধার ও নাজিমূল হক উর্দু দৈনিক আকবর-ই-মসরিকের কর্ণধার।

এদিকে, শনিবার রাজ্যসভা ভোটের চতুর্থ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী শুভ্রা ঘোষও। ফলে
রাজ্যসভার মনোনয়নকে সামনে রেখে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সংঘাত ফের প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।

শনিবারই ছিল মনোনয়নপত্র তোলার শেষ দিন। রাজ্যসভা ভোটে কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে কি না, সে ব্যাপারে এ দিনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে কংগ্রেস হাইকমান্ড।

কংগ্রেসের দাবিকে কার্যত আমল না দিয়ে, শুক্রবার চারটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার রাতে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সঙ্গেও কথা হয়েছে তার।

রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৫টি আসন রয়েছে। বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে তৃণমূলের ৩টি ও বামেদের ১টি আসন পাওয়ার কথা। গোল বেঁধেছে চতুর্থ আসনটি নিয়ে। তিন জনকে নির্বাচিত করার পর চতুর্থ প্রার্থীকে জেতানোর জন্য প্রয়োজনীয় ৪৯টি ভোট তৃণমূলের হাতে নেই।

৩টি আসনের প্রার্থীদের জেতানোর পর তৃণমূলের হাতে থাকা অতিরিক্ত ভোটের তুলনায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা বেশি। ফলে ওই আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করতে মহাকরণে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা সাকিল আহমেদ। কিন্তু তাকে নিরাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে সোনিয়া গান্ধীকে প্রদীপ ভট্টাচার্যের আর্জি, একটি আসনে কংগ্রেসকে প্রার্থী দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মতে, তৃণমূলের একতরফা ভাবে প্রার্থী ঘোষণা জোট রাজনীতির ক্ষেত্রে অশুভ ইঙ্গিত। এর আগে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করে একই অনুরোধ জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা শাকিল আহমেদও।

কিন্তু কংগ্রেসের সমস্ত অনুরোধ-আর্জিকে দুরে সরিয়ে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রণব মুখার্জির আত্মীয়া শুভ্রা ঘোষকে প্রার্থী করে কংগ্রেস আদৌ মমতার সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটবে কি না, তা এখন সোনিয়া গান্ধীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১২
আরডি

সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।