ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মুকুল রায় ভারতের নতুন রেলমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১২
মুকুল রায় ভারতের নতুন রেলমন্ত্রী

নয়াদিল্লি : ভারতের নতুন রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মুকুল রায়।

মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবেনে শপথ নেন তিনি।

দলের অপর নেতা দীনেশ ত্রিবেদীর স্থলাভিষিক্ত হলেন মুকুল।
নতুন এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে দলের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির একটি মিশন সম্পন্ন হলো। মমতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মুকুল রায় এর আগে নৌপ্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর পদ ছেড়ে মমতা যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন তখন থেকেই মমতার ইচ্ছে ছিল মুকুল রায় যেন তার স্থানটি পান।

মুকুল রায়ের পূর্বসুরী দীনেশ ত্রিবেদী অবশ্য রেলওয়ের বাজেট প্রস্তাবে ভাড়া বাড়ানোর ‘সাহসী’ সিদ্ধান্তের কারণে মূল শরীক কংগ্রেস দলীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ ক্যাবিনেটের অন্যান্য সহকর্মীর কাছ থেকে প্রশংসাই পেয়েছিলেন।

ভারতে গত নয় বছরের মধ্যে প্রথম ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়ে অনেকটা হৈ চৈ ফেলে দেন তিনি। যে কাজ এর আগে লালু প্রসাদ যাদব করার সাহস পাননি এমনকি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী থাকার সময় মমতাও করেননি, সেই কাজ করে দীনেশ ত্রিবেদী অনেকটাই সাহসের পরিচয় দেন।  

তবে কংগ্রেসের তরফে ব্যাপক প্রশংসা পেলেও তার এই পদক্ষেপে নিজের দল তৃনমূলের মধ্যেই ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরিশেষে তাকে মন্ত্রণালয় থেকেই বিদায় নিতে হয়।

ট্রেন ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবে তৃনম‍ূল প্রধান মমতা ব্যানার্জী এতই চটেছিলেন যে অনেকটা অস্বাভাবিকভাবেই তিনি মন্ত্রিসভা থেকে দীনেশের পদত্যাগ দাবি করেন। এমনকি তিনি নিজে তাকে পদত্যাগ করতে চাপ দেন।

এ সময় মমতা ব্যানার্জি অনেকটা প্রকাশ্যেই রেলমন্ত্রী হিসেবে দীনেশ ত্রিবেদীর জায়গায় মুকুল রায়ের নাম প্রস্তাব করেন।
মমতার মনোভাব প্রকাশ পায় তার সরকারকে লেখা তার চিঠিতে ‘মুকুল রায় পরবর্তী রেলমন্ত্রী হতে পারেন। তিনি ছয় বছর ধরে তৃণমূলের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবারও তিনি রাজ্যসভার সদস্যপদের জন্য মনোয়ন পেয়েছেন। তিনি একজন ভালো কর্মী। এখন সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ’

এর পাশাপাশি মুকুল রায়ের প্রতি মমতার দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ পায় যখন মুকুল রায়কে রোববার নয়াদিল্লিতে মমতা ব্যানার্জির পাশে তার অন্যতম সহচর হিসেবে দেখা যায়। সোমবার দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হওয়া তৃনমূল সংসদীয় দলের বৈঠকের প্রাক্কালে এটিকে  একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন বিশ্লেষকরা।

পরদিন মঙ্গলবার সকালেও মুকুল রায় মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করেন। এমনকি রাষ্ট্রপতি ভবনের বৈঠকের সময়েও তাকে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা যায়।

তবে বিশ্লেষকদের দৃষ্টি ছিল তৃণমূলের সংসদীয় দলের বৈঠকের দিকে। মঙ্গলবার মমতা ব্যানার্জি এবং দীনেশ ত্রিবেদী এই বৈঠকেই ৯ মার্চের পর প্রথম মুখোমুখি হন। তবে বিচ্ছেদের সমূহ সম্ভাবনা থাকলেও তৃণমূল নেত্রী বৈঠক শেষে হাসিমুখে সাংবাদিকদের বলেন ,‘ত্রিবেদী দলের সাথে থাকতে চেয়েছেন এবং বৈঠক সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে। ’

অথচ রোববার রাতেই ত্রিবেদী তার পদত্যাগপত্র পেশ করেন অনেকটার মমতার কারণে বাধ্য হয়েই। তবে ত্রিবেদী অবশ্য দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী বা তার দলীয় নেত্রী কেউই তাকে দল থেকে সরাসরি পদত্যাগ করতে বলেননি। তবে তিনি যে নিজের মুখরক্ষার জন্যই এসব বলছেন, তা দিনের আলোর মতই পরিষ্কার।

বাংলাদেশ সময় : ১১০২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১২

সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর; আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।