ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

নন্দীগ্রাম: ৩ সিপিএম নেতা রিমান্ডে

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১২

কলকাতা: নন্দীগ্রাম নিখোঁজ কাণ্ডে গ্রেফতার সাবেক সিপিএম সাংসদ লক্ষণ শেঠ ও অপর দুই সিপিএম নেতা অমিয় সাউ ও অশোক গুড়িয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে মঙ্গলবার ৩ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন হলদিয়া মহকুমা আদালতের এসিজেএম সর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায়।

আগামী শুক্রবার ফের ওই আদালতে তাদের হাজির করার নির্দেশ দেন বিচারক।

মঙ্গলবারই তাদের কলকাতার ভবানী ভবনে এনে জেরা করা হয়।

এর আগে সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট নাগাদ ভবানী ভবন থেকে হলদিয়া যাওয়ার পথে লক্ষণ শেঠ ও পূর্ব মেদিনীপুরের ওই দুই শীর্ষ স্থানীয় নেতাকে নিয়ে আসা হয় পিজি হাসপাতালে। প্রথমে তাদের জরুরি বিভাগ ও পরে কার্ডিওলজি বিভাগে নিয়ে এসে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করা হয়।

এর পর ওই তিন জনকে নিয়ে সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ হলদিয়া মহকুমা আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সিআইডি। বেলা ১২টা নাগাদ তারা হলদিয়ার আদালত চত্ত্বরে পৌঁছান। দুপুর ২টা নাগাদ লক্ষণদের হাজির করানো হয় বিচারকের সামনে। সিআইডির তরফ থেকেই আরও জেরার জন্য ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন জানানো হয়।

অন্যদিকে, লক্ষণবাবুদের আইনজীবীরা পুরো অভিযোগই সাজানো বলে দাবি করে জামিনের আবেদন করেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে দুপক্ষের সওয়াল জবাব শেষে বিচারক তার রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে চত্ত্বরে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়োগ করা হয়। ছিল ইএফআর, কম্বাক্ট ফোর্স। জারি হয় ১৪৪ ধারা। প্রয়োজনীয় কারণ না দেখিয়ে কাউকে আদালত চত্ত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এতো নিরাপত্তা সত্ত্বেও আদালত চত্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। আদালতের মূল প্রবেশ দ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জেলা পুলিশ যথেষ্ট সচেষ্ট ছিল এ বিক্ষোভ সামলাতে।

সোমবারই আদালতে তোলার কথা ছিল লক্ষণ শেঠসহ ধৃত অপর দুইজনকে। কিন্তু আইনগত কিছু সমস্যার কারণে ওই দিন আদালতে পেশ করা হয়নি বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়। এর পরিবর্তে প্রথমে ঠিক ছিল আগামী ২২ মার্চ আদালতে হাজির করা হবে। ততোদিন সিআইডি হেফাজতে রাখা হবে লক্ষণ শেঠকে। চলবে জেরা।


কিন্তু লক্ষ্মণ শেঠের স্ত্রী তমালিকা শেঠ জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে তার স্বামীকে আদালতে পেশ না করা হলে তিনি হাইকোর্টে আবেদন জানাবেন। এছাড়াও এদিন ভবানী ভবনে লক্ষণ শেঠের হয়ে একদল আইনজীবী দেখা করতে যান। এরপরই পুলিশের তরফ থেকে লক্ষণ শেঠকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানানো হয়।

এদিকে, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র সিপিএম’র নেতা লক্ষণ শেঠ, অমিয় শাহু ও অশোক গুরিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যে সরকারের প্রতিহিংসা থেকেই তা আরেকবার দাবি করেছেন।

তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। তবে আইন আইনের পথেই যাবে। দলীয় কর্মীদের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালে যে ঘটনা ঘটে ছিল, তাতে মাওবাদী-তৃণমূলের অাঁতাত ছিল, তার প্রমাণ পুলিশের কাছে আছে। মাওবাদীরা তৃণমূলের কাছ থেকে টাকা ও অর্থ দুই পেয়েছিল। নাম-ধামের তালিকা তাদের কাছে আছে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ মার্চ মুম্বইয়ের চেম্বুর থেকে গ্রেফতার হন লক্ষণ শেঠ। সেই সঙ্গে অপর দুই অভিযুক্ত অমিয় সাউ ও অশোক গুড়িয়াকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিনই ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় অভিযুক্তদের। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম ‘পুনদর্খল’ কাণ্ডে খুন, লুটপাট, তথ্যপ্রমাণ লোপাট প্রভৃতি মামলায় লক্ষণ শেঠকে ফেরার ঘোষণা করে ৩০ জানুয়ারি চার্জশিট দেন আদালত।


বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১২

আরডি
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।