ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রিজার্ভ চুরি মামলা বন্ধে ফিলিপাইনের ব্যাংকের আবেদন খারিজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
রিজার্ভ চুরি মামলা বন্ধে ফিলিপাইনের ব্যাংকের আবেদন খারিজ

ঢাকা: রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসিসহ ৬ জনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট (স্টেট কোর্ট)। এর ফলে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাকের রিজার্ভ থেকে চুরি করা অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশের করা মামলা চলার ক্ষেত্রে বাধা দূর হলো।

সোমবার (১৬ জানুয়া‌রি)  এ তথ্য জানিয়েছে আর্থিক গেয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।

আদালত তার রায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যোগসাজশ ছিল। আদালতের রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, আরসিবিসির নিউইয়র্কের হিসাব ব্যবহার না হলে এবং ফিলিপাইনে আরসিবিসি অভিযুক্তদের সহযোগিতা না করলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ওই অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না।

স্টেট কোর্ট আরসিবিসি ও অন্যান্য বিবাদীদের আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দেওয়ার আদেশ এবং মধ্যস্থতার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নিউইয়র্কে নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনি প্রতিষ্ঠান মধ্যস্থতার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।

বিএফআইইউ জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত হয়েছে বিবেচনায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দি সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্কে (ফেডারেল কোর্ট) আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। পরে আরসিবিসিসহ ৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মামলা বাতিল করার (মোশান চু ডিসমিস) আবেদন করে। এরপর বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০২০ সালের ২০ মার্চ ফেডারেল আদালত ফিলিপাইনের বিভিন্ন বিবাদী কর্তৃক দায়ের করা আবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলাটি ফেডারেল কোর্টের পরিবর্তে স্টেট কোর্টে পরিচালনার নির্দেশ দেন।

সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৭ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টে (স্টেট কোর্ট)  আরসিবিসিসহ ফিলিপাইনের ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার পর ৬ বিবাদী ফেডারেল কোর্টের মতো এই কোর্টেও মামলা বাতিলের আবেদন করেন। বিবাদী পক্ষের আবেদনের বিষয়ে ২০২১ সালের ১৪ জুলাই ও ১৪ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের আর্থিক খাতের ইতিহাসে রিজার্ভ চুরির বড় এ ঘটনা ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে। চুরি হয়  ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। অনলাইন সিস্টেম হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পাচার হওয়া এই অর্থ প্রথমে ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের রিজাল ব্যাংকের ৪টি ভুয়া অ্যাকাউন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর সেখান থেকে হ্যাকাররা দ্রুত এই অর্থ তুলে নিয়ে যায়। সে সময় মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধারে সমর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। খোয়া যাওয়া বাকি অর্থ ফেরত প্রক্রিয়ায় মামলা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
জেডএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।