ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুঁজির নিরাপত্তা থাকায় তরুণরা জুয়েলারি ব্যবসায় আসছেন: দিলীপ রায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩
পুঁজির নিরাপত্তা থাকায় তরুণরা জুয়েলারি ব্যবসায় আসছেন: দিলীপ রায়

ঢাকা: পুঁজির নিরাপত্তা, নিজস্ব বাজার ও রপ্তানির সম্ভাবনা থাকায় তরুণরা জুয়েলারি ব্যবসায় আসছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়।  

তিনি বলেন, জুয়েলার্স শিল্পে বর্তমানে পুঁজির নিরাপত্তা রয়েছে।

আমাদের নিজস্ব বাজার রয়েছে। আগামীতে বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করবো। ফলে এখাতে অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে ‘জুয়েলারি শিল্পের দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।  

বাজুসের সহ সভাপতি ডা. আমিনুল ইসলাম শাহীনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়। সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাজুসের সদস্য ও সিনিয়র টেকনোলজি কনসালট্যান্ট পিডব্লিউসি তাসনিম নাজমুনা। সেমিনার সঞ্চালনা করেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল।

সেমিনারে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সহ সভাপতি ডা. আমিনুল ইসলাম শাহীন, বাজুস কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আসলাম খান, সুলতান জুয়েলার্সের পরিচালক আছিফ ইকবাল, শাওন সাহা, জরোয়া হাউস লিমিটেডের পরিচালক অভি রায়, আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার আজাদ আহমেদ প্রমুখ।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাজুসের সাবেক সভাপতি দিলীপ কুমার রায় বলেন, আজকের এ আয়োজন নতুনদের নিয়ে যাদের নিয়ে আমাদের ভাবনা, কল্পনা, প্রত্যাশা। আমাদের একটা অতীত রয়েছে। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আমরা অনেক সাহসী হয়েছি। আমরা যখন এ ব্যবসায় এসেছিলাম তখন আমাদের এতো সাহস ছিল না।

তিল তিল করে গড়ে তোলা শিল্পটি গত এক বছরে কলি থেকে ফুল পরিস্ফুটিত হয়েছে। এ ফুলটিকে ভালো রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এখাতে খুব বেশি ধনী লোক নেই। হয়তো ১০০ কোটি থেকে ২০০ কোটির টাকার মধ্যে আমরা আছি। বর্তমানে জুয়েলারি খাতে দুই হাজার, পাঁচ হাজার কোটি টাকার মালিক কেউ নেই। এর কারণ হলো আগে কোন নীতিমালা ছিল। ফলে বড় ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা অন্য খাতে নিয়ে গেছে। তবে বর্তমানে সে অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বসুন্ধরা যদি পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারে তাহলে আপনার আমার ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সাহস হবে। এর অন্যতম কারণ হলো বর্তমানে পুঁজির নিরাপত্তা রয়েছে। আমাদের নিজস্ব বাজার রয়েছে। আগামীতে বিশ্ব বাজারে আমারা প্রবেশ করবো।

তিনি বলেন, আমাদের হাতে গড়া কারিগর বা শিল্পীদের নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। তারা আছে এবং থাকবে। তবে আগামীতে শুধু লেখাপড়া কম জানা কারিগরের পাশাপাশি আগামীতে আমাদের উচ্চ শিক্ষিত সন্তানরা কারিগর হবে। তারা মেশিন ইনচার্জসহ সেক্টরের ইনচার্জ হবে। তারাই আমাদের গর্ব করার মতো এ খাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আর আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ আমাদের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নির্দেশিত পথে হাতে হাত রেখে এক সঙ্গে মোকাবিলা করবো। একই সঙ্গে জুয়েলারি খাত বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী মানে সিআইপি, রাষ্ট্র তাকে মর্যাদা, সম্মান ও নিরাপত্তা দেবে সেই প্রত্যাশাই করছি।  

বাজুস কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য রিপুনুল হাসান বলেন, বাজুস প্রেসিডেন্ট তরুণদের অনেক পছন্দ করেন। তিনি বলেন, তরুণদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা অনেক সাহস পেয়েছি। আমি এখন স্বপ্ন দেখি জুয়েলারি রপ্তানি করার। তবে সে দিন বেশি দূরে নয় বসুন্ধরা গ্রুপের যে গোল্ড রিফাইনারি হচ্ছে সেখানে র-ম্যাটারিয়াল এভেইলএবল হলে আমি এ বছর থেকেই জুয়েলারি রপ্তানি করতে পারবো। শুধু আমি একাই নই আমার মতো আরও অনেকেই আছে। নতুন প্রজন্মের তরুণরা এখন এ খাতে আসছেন।

মূল বক্তব্য দেন বাজুসের সদস্য ও সিনিয়র টেকনোলজি কনসালট্যান্ট পিডব্লিউসি তাসনিম নাজমুনা বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে আছি। সেখানে টেকনোলজি ব্যবহার করে দ্রুত ব্যবসা করা যায় এবং লাভবান হওয়া যায়। বর্তমানে আমাদের দেশের প্রতিটি খাত এখন আধুনিক হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখনও খাতা কলমেই আছি। আমরা অনেক টাকা বিনিয়োগ করি। অথচ আমাদের কোনো কারিগরি বা ডিজাইনের ইনস্টিটিউট নেই। আমরা যখন একজন ডিজাইনার হায়ার করি তিনি যে কতোটা মান সম্পন্ন সেটা কীভাবে বিচার করবো। এজন্য আমাদের একটা ইনস্টিটিউট প্রয়োজন। বর্তমানে তরুণরা এ ব্যবসায় আসছেন। সামনে রপ্তানিও করা হবে। এজন্য আমাদের বিভিন্ন প্রসেসগুলো সহজ করতে হবে।  

সভাপতির বক্তব্যে বাজুসের সহ সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, বাজুস ফেয়ারে বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। আমরা তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে স্থান চাই। এটাই হবে আমাদের স্থায়ী ঠিকানা। আমাদের জুয়েলারি শিল্প অতীতেও ছিল বর্তমানেও আছে। তবে ভাবমূর্তি সংকটে ছিল। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্থনীতিতে সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। আপনাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সেলক্ষ্য অর্জন করবেন সে কামনা করছি।

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) আয়োজিত বাজুস ফেয়ার  গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনদিন আইসিসিবির নবরাত্রি হলে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এবার বাজুস ফেয়ারে আটটি প্যাভিলিয়ন, ১২টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ৩০টি স্টলে দেশের ঐতিহ্যবাহী ৫০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।