ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নাটোরে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু

মো. মামুনুর রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
নাটোরে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু

নাটোর: নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেডের ৯১তম আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হয়েছে। এবার কড়া নজরদারিতে পাওয়ার ক্রাশার দিয়ে আখ মাড়াই বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এবার লাভের সম্ভাবনা দেখছেন মিল কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে মিলের ডোঙ্গায় আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল।  

বিএসএফআইসি চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) শেখ শোয়েবুল আলমের সভাপতিত্বে আখ মাড়াই কার্যক্রম উদ্বোধনের আয়োজন করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম, ঈশ্বরদী ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের মহাপরিচালক ড. অমর আলী, নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঞা, মিলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. আসহাব উদ্দিন, মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ খবির উদ্দিন মোল্যা, সহকারী পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিব, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা, গোপালপুর পৌরসভার মেয়র রোকসানা মোর্তজা লিলি, মিলের শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি খন্দকার শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস সূত্র জানায়, চলতি ২০২৩-২৪ আখ মাড়াই মৌসুমে ১০৩ কার্যদিবসে ১ লাখ ৭০ হাজার টন আখ মাড়াই করে ১১ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৬ দশমিক ৯০ ভাগ। উৎপাদিত চিনির দাম ধরা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।  

গত ২০২২-২০২৩ মাড়াই মৌসুমে ৫২ কর্মদিবসে ৮১ হাজার ৮২৯ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৪০৭ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়। চিনি আহরণের হার ছিল শতকরা ৫ দশমিক ৩৬ ভাগ।

সূত্রটি আরও জানায়, এ বছর আখের দাম ১৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তী মৌসুমে তা আরও বাড়িয়ে ২৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষিদের কষ্টার্জিত আখের দাম সহজ ও নিরাপদ করতে বিকাশ সিস্টেম চালু করা হয়েছে। প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে পুর্জির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিলকে লাভজনক ও চাষিদের আখ আবাদে উৎসাহিত করতে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. আসহাব উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে মিলের নিজস্ব ১ হাজার ৬০২ একর জমি এবং মিল এলাকায় ১১ হাজার ৫০০ জন কৃষকের ১৩ হাজার ৯৮ একরসহ মোট ১৪ হাজার ৭০০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এবার যাতে মিলে আখ প্রাপ্তিতে কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে সেজন্য এ বছর ৩৫৯ জন পাওয়ার ক্রাশার মালিককে ক্রাশার বন্ধ রাখার জন্য চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কেননা প্রতি বছর পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করার জন্য মিলে আখের সংকট দেখা দিত। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের আগেই মিল বন্ধ করার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চিনি উৎপাদন না হওয়ায় লোকসান গুনতে হতো। স্বাধীনতার পর থেকে মিলটির লাভের চেয়ে লোকসানের ঘানি টানতে হয়েছে বেশির ভাগ সময়। চিনিকলটিকে ২৫ বার লাভ আর ২৬ বার লোকসান গুনতে হয়েছে। এখনও প্রায় ৮৩১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা লোকসান রয়েছে চিনিকলটির। তবে এবার কাঙ্ক্ষিত আখ পেলে মিলটির লাভের মুখ দেখার আশা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বাংলানিউজকে জানান, দেশের প্রাচীনতম নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে কো-জেনারেশন পদ্ধতিতে বিদুৎ উৎপাদন ও সুগার রিফাইনারি, ডিস্টিলারি স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সারা বছর উৎপাদন কার্যক্রম চালু থাকবে। এতে দেশে চিনির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মিলের লোকসান আর থাকবে না। এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।