ঢাকা, রবিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০৬, মে ১৭, ২০২৫
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের

তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সামগ্রীসহ কয়েকটি বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ওপর স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। দেশটির মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী ইত্যাদির মতো কিছু পণ্য ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে আসায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ মে) ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত মাসে কিছু ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ঢাকা, তারই প্রতিক্রিয়ায় ভারত সরকার শনিবার এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ কিছু পণ্য আমদানি কোনো স্থলবন্দর থেকে অনুমোদিত হবে না। শুধু নহাভা শেভা এবং কলকাতা সমুদ্র বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আনা যাবে। তবে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হবে সেগুলোর ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত এবং কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য (বেকড পণ্য, স্ন্যাকস, চিপস এবং মিষ্টান্ন), তুলা এবং সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিক এবং পিভিসি তৈরি পণ্য, রঞ্জক, প্লাস্টিকাইজার এবং দানাদার এবং কাঠের আসবাবপত্র আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের কোনো এলসিএস (ভূমি শুল্ক স্টেশন) এবং আইসিপি (সমন্বিত চেক পোস্ট) এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা এবং ফুলবাড়ির এলসিএস দিয়ে অভ্যন্তরীণ চালান অনুমোদিত হবে না।

এতে আরও বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ থেকে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণ পাথর আমদানির ক্ষেত্রে এই বন্দর নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়।  এই নিষেধাজ্ঞার জন্য আমদানি নীতিতে একটি নতুন অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্যগুলোর আমদানি নিয়ন্ত্রণ করবে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ গত ১৩ এপ্রিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। শুধুমাত্র সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।  এরপর ১৫ এপ্রিল থেকে বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়নি, যা বিদ্যমান বিধিনিষেধের সঙ্গে যুক্ত।

সেই প্রসঙ্গ টেনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে এই পদক্ষেপের প্রতিদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ’ 

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভারত আলোচনায় অংশ নিতে ইচ্ছুক, তবে বিদ্বেষমুক্ত পরিবেশ তৈরির দায় নিতে হবে বাংলাদেশকে।  

ভারতের বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, কলকাতা এবং মহারাষ্ট্রের নেহভা শেভা বন্দর দিয়ে যেহেতু এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশ এসব পণ্য আনতে পারবে। এতে বাংলাদেশের এসব পণ্য পরিবহনের খরচ বাড়বে।

উল্লেখ্য, টেক্সটাইল খাতে ভারতের একটি বড় প্রতিযোগী বাংলাদেশ। ২০২৩-২৪ সালে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ প্রতি বছর ভারতে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে।

টিআর/ইইউডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।