ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

শেয়ারবাজারে দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে: আমীর খসরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৯, জুলাই ১৪, ২০২৫
শেয়ারবাজারে দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে: আমীর খসরু কথা বলছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

ঢাকা: শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরেই একটি দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে ‘ভালোর চক্র’বা ভার্চ্যুয়াল সাইকেল তৈরির তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো স্বাধীন ভূমিকা পালন করতে পারে না, আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতারও ঘাটতি রয়েছে। এটি শুধু শেয়ারবাজারে নয়; পুরো আর্থিক খাতেই এমন চিত্র রয়েছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারেজ হাউস মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) আয়োজিত পুঁজিবাজারবিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থায় রাজনৈতিক নিয়োগ দেওয়া হবে না। অতীতেও বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় এসব প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে তখন ব্যাংক ধসে যায়নি এবং পুঁজিবাজারে লুটপাট হয়নি।

ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত সরকারি অনেক ভূমিকা বাণিজ্য সংগঠনের কাছে দেওয়া হবে বলে জানান আমীর খসরু।  

তিনি বলেন, আগে তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতার অনুমোদন (ইউডি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে নেওয়া লাগত। এতে আমদানিকারকদের দীর্ঘ সময় লাগত, নানা জটিলতায় পড়তে হতো। তখন এই অনুমোদনের বিষয়টি তৈরি পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কাছে দিয়ে দিই। এতে প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়ে যায়।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনীতিকেও গণতান্ত্রিক করতে হবে।  

তিনি বলেন, আপনি শুধু রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করবেন, আর অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করবেন না, তাহলে সেটি ঠিকভাবে কাজ করবে না। ফলে এটা আমাদের (বিএনপির) অন্যতম একটি লক্ষ্য যে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অবশ্যই গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে।

তিনি বলেন, অর্থনীতির গণতন্ত্রায়ণ না হলে তাতে মানুষের অংশগ্রহণ ও আস্থা বাড়বে না। এর ফলে অর্থনীতিতে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায় না। বরং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে যে যার জায়গা থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

এসইসি, ডিএসই, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ শেয়ারবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে একত্রে সংস্কার কাজ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসবের ভেতর সমন্বয় থাকতে হবে। খারাপ যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সার্বিকভাবে এসব উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

আমীর খসরু আরও বলেন, ভবিষ্যতে বিএনপি সরকারে গেলে শেয়ারবাজারকে আমরা ধারণ করব। কারণ, যারা দেশ পরিচালনা করবে, তারা ধারণ করা ছাড়া পুঁজিবাজারের সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, রেগুলেশনকে আরও বাজারমুখি করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাজার কখনোই রিলেভ্যান্ট ভূমিকা পালন করতে পারেন নাই। দেশের অর্থনৈতিক কোন সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার থাকেনা। তবে এই অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বাজারে নতুন কোন ভালো শেয়ার নেই। গত নয় মাসে মাত্র একটা কোম্পানি বাজারে এসেছে। এছাড়াও বিগত সরকারের কয়েক বছরে যে পরিমাণ কোম্পানি বাজারে এসেছে তা যথেষ্ট নয়। এরপরেও বাজারের উন্নয়ন হয়েছিলো। যেটুকু হয়েছিলো তা নানাভাবে মেনিপুলেশনের মাধ্যমে নষ্ট করা হয়েছে।

ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান, পুঁজিবাজার প্রতিবেদকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মানিক মুনতাসির।

জেডএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।