দেশের বিমা খাত নিয়ন্ত্রণ করছে শীর্ষ পাঁচ কোম্পানি। এদের হাতেই সম্পদ ও প্রিমিয়ামের সিংহভাগ।
বিমা খাত এককভাবে পরিচালিত হলেও এর আর্থিক কর্মকাণ্ড সরাসরি যুক্ত রয়েছে ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মূলধন বাজার ও বন্ড বাজারের সঙ্গে। জীবন বিমা কোম্পানিগুলো বিনিয়োগের প্রায় ৬৩ শতাংশ সরকারি বন্ডে রেখেছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) পরিমাণ ২০২৩ সালের ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশে নেমেছে।
এ আমানত ব্যাংক খাতের আমানতের মাত্র ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ হওয়ায় বিমা কোম্পানি হঠাৎ টাকা তুলে নিলে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের চাপ পড়বে না। তবে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ধস নামলে বিমা খাতও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিনিয়োগের ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ রাখা হয়েছে পুঁজিবাজারে। শেয়ারবাজারের দুর্বল পারফরম্যান্স সরাসরি বিমা খাতের আয়কে প্রভাবিত করছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানির সম্মিলিত বাজার মূলধন ২০২৩ সালের ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মানে, শেয়ারবাজারে বিমা খাতের প্রভাব সীমিত। কিন্তু বিমা খাতের নিজস্ব বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে উল্লেখযোগ্য হওয়ায়, বাজারে মন্দা এ খাতের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে। বিশ্লেষকদের মতে, শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের দাপট খাতজুড়ে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করছে। এদের যে কোনো একটির বড় সংকট পুরো খাতকে নাড়িয়ে দিতে পারে। বাজারের বড় অংশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকায় নতুন বা ছোট কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে বাজারে সেবা ও পণ্যের বৈচিত্র্য সীমিত হচ্ছে। বিমা খাতের ঘনত্ব ও আন্তসংযোগ খাতটিকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে। সঠিক নীতি ও কঠোর তদারকি ছাড়া এই খাত অচিরেই আরও বড় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে, যা সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন