পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি দিয়ে সড়কপথে বাংলাদেশ থেকে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছে। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর।
অভিযোগ আছে নানা প্রতিবন্ধকতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি কার্যক্রম। একসময় ভারত ও ভুটান থেকে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক পাথর আমদানি হলেও এখন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাকে। অনেক সময় তারও নিচে নেমে আসে এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী,চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন কম পণ্য আমদানি হয়েছে। এতে করে আমদানিতে ধাক্কা খাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থল বন্দরটি। মূলত ভারতের ভেতরে একের পর এক সৃষ্ট নতুন প্রতিবন্ধকতা দায়ী বলে জানানো হয়েছে।
এর মাঝে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ সবার মাঝে দুশ্চিন্তা থাকলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে রপ্তানিখাতে। প্রতিদিন আলু, পাট ও গার্মেন্টস ঝুটসহ বিভিন্ন বাংলাদেশি পণ্য নেপালসহ প্রতিবেশী দেশে রপ্তানি হচ্ছে। খানিকটা আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির কারণে কিছুটা কর্মযজ্ঞ বা মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে বন্দর এলাকাজুড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা জানান, রপ্তানি বাড়লেও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, শুল্ক জটিলতা ও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে এখনো কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। আর শ্রমিক নেতাদের দাবি, বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানও বাড়বে।
বন্দর সূত্রে আরও জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শুরুতে ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সীমিত আকারে শুরু হলেও ভারতের সঙ্গে মূল্য নিয়ে মতবিরোধের জেরে বছরের শুরু থেকে ভারতীয় পাথরের আমদানি কার্যত বন্ধ। যা এখনো বন্ধ রয়েছে।
বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে জানান, ভারত ও ভুটানের দ্বন্দ্বের কারণে আমদানি প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টন আমদানি কমেছে এই স্থলবন্দর দিয়ে। তবে তবে পাথর নির্ভরশীল এই বন্দর দিয়ে নেপালসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টন।
তার মতে, সমস্যাগুলো কেটে গেলে এ বন্দর দেশের অর্থনীতিতে আরও বড় ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধকেন্দ্রের কোয়ারেন্টিন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে নেপালে আলু ও পাটের চাহিদা দ্বিগুণ রয়েছে। একইসঙ্গে আলুসহ বাংলাদেশি এসব পণ্যের গুণগতমান ভালো থাকায় দিন দিন চাহিদাও বাড়ছে। এতে রপ্তানি কার্যক্রম বিদেশি মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
উজ্জ্বল হোসেন আরও জানান, শুধু গত রোববারেই (৩১ আগস্ট) নেপালে রপ্তানি হয়েছে ৫৯০ টন পাট এবং ৮৪ টন আলু। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৬৯ টন পাট এবং ২৪ হাজার ৮৪৩ টন আলু।
এএটি