প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার অভাব, কাঁচামাল আমদানিতে উচ্চ শুল্ক হার, বন্ডেড সুবিধার অনুপস্থিতি, অপ্রতুল অবকাঠামো, টেস্টিং সুবিধার অপর্যাপ্ততার কারণে খেলনা শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণ: খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন এবং রপ্তানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের বিষয়টি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিগত বছরগুলোতে রপ্তানি গুটিকয়েক পণ্যের ওপর অধিকমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ভাবনী কার্যক্রমে শিক্ষাখাতের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন।
এনবিআরের সদস্য মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতের উপর নজর দিতে হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংশ্লিষ্ট নীতিমালা সহজীকরণ ও বন্ডেড সুবিধা প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালে প্রণীত ট্যারিফ নীতিমালার অনুসারে রাজস্ব বিভাগ শুল্ক আরোপ করে থাকে এবং এক্ষেত্রে বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর কিছু সুপারিশ থাকে, যা মেনে চলতে হয়। অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে কোন নীতি সহায়তা পরিবর্তনের তেমন সুযোগ নেই, তবে আগামী বছরে বাজেট প্রণয়নে এ খাতের প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।
এনবিআরের এই সদস্য আরও বলেন, গত ৪০ বছর ধরে তৈরি পোশাক খাতে সহায়তা দেওয়া হলেও এ খাতের সক্ষমতা কতটুকু বেড়েছে, তা নিয়ে চিন্তার সময় এসেছে। তাই খেলনা শিল্পের উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রাপ্তির চাইতে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো এবং পণ্যের উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বেশি হারে মনোযোগী হওয়ার ওপর তিনি জোর দেন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত খেলনা পণ্য রপ্তানির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এবং ব্রিটিশ সরকার এ খাতে সহযোগিতা করতে বেশ আগ্রহী। বিদ্যমান নীতিমালার সংস্কার ও প্রতিবন্ধকতা নিরসন করা সম্ভব হলে ব্রিটেনে এ খাতের পণ্যের রপ্তানি আরও বহু গুণ বাড়বে।
তিনি জানান, ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি রুলস অব অরিজিনের শর্তাবলি সহজীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে, যা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তার দেশে পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে সহযোগিতা করবে।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জালালাবাদ পলিমারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ জানান, প্লাস্টিক খাতে বাংলাদেশে প্রায় ৫ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ২৫০টি খেলনা সামগ্রী উৎপাদনের সাথে জড়িত এবং এখাতে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ কর্মরত রয়েছেন।
জেডএ/এমজেএফ